Thursday, 15 September 2022

বহুরূপী সুবোধ ঘোষ

 অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর 

(১) " হরিদার কাছে আমরাই গল্প করে বললাম।,"

--- 'আমরা' বলতে এখানে কাদের বোঝানো হয়েছে ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।  এখানে 'আমরা' বলতে স্বয়ং গল্পকথক  ও তাঁর বন্ধু ভবতোষ , অনাদি ছাড়াও অন্যদের বোঝানো হয়েছে। 


(২) হৃদয়ের কাছে লেখক ও তাঁর বন্ধুরা কী গল্প করেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।                                 হিমালয়ের এক উঁচুদরের সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর বাড়িতে সাত দিন ছিলেন। তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি। তিনি বছরে একটিমাত্র হরীতকী খান।  সেই গল্পই গল্পকথা ও তাঁর বন্ধুরা করেছিলেন।  

(৩) " বাঃ , এ তো বেশ মজার ব্যাপার !" 

---- মজার ব্যাপারটি কী ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ। 

         মজার ব্যাপারটি হল সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো দুর্লভ হলেও কাঠের খড়মে সোনার বোল  লাগিয়ে তাঁর পায়ের কাছে ধরতেই তিনি পা বাড়িয়ে দিলেন।  সেই ফাঁকে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন। 

(৪) " গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা " 

---- হরিদার গম্ভীর হওয়ার কারণ কী ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ। 

          সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম ও একশো  এক টাকা পেয়ে তৃপ্তির হাসি হাসেন।  এ কথা শুনে সন্ন্যাসীর প্রতি হরিদার বিশ্বাস তলে যায়।  তিনি গম্ভীর হয়ে যান।  

(৫) " কিন্তু ওই ধরনের কাজ হরিদার জীবনের পছন্দই নয় "

---- কোন ধরনের কাজের কথা বলা হয়েছে ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ। 

                    অভাবী হরিদা ইচ্ছে করলেই কোনো অফিসে বা দোকানে একটা কাজ পেতে পারতেন।  কিন্তু ঘড়ি ধরে নিয়ম করে রোজ একটা চাকরি করা হরিদার পছন্দ ছিল না।  

(৬) " খুব হয়েছে হরি , এইবার সরে পড়ো। অন্যদিকে যাও। "

---  কে , কেন কথাটি বলেছেন ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ। 

            একদিন দুপুরে চকের বাস স্ট্যান্ডে হরিদা পাগলের ছদ্মবেশে হাতে থান ইট নিয়ে বাসে -বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিলেন।  সেই প্রেক্ষিতেই বাস ড্রাইভার কাশীনাথের এই উক্তি।  

(৭) " কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে ---- হরির কান্ড !" 

----- হরির কান্ড দেখে দোকানদার হেসে ফেলেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ। 

           এক সন্ধ্যায় বাইজির ছদ্মবেশে হরি শহরের পথে ঘুঙুরের মিষ্টি শব্দ করে হেঁটে চলে।  নতুনরা অবাক হলেও দোকানদার হরিকে চিনতে পেরে হেসে ফেলে। 

(৮) " এবারের মতো মাপ  করে দিন ওদের। "

----- এ কথা কে কাকে বলেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

       দয়ালবাবুর  লিচু বাগানে যখন পুলিশের ছদ্মবেশে হরিদা স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিলেন ,তখন স্কুলের মাস্টারমশাই এ কথা বলেছিলেন। 

(৯) " বাঃ , সত্যি ,খুব চমৎকার পুলিশ সেজেছিল হরি !" 

- কে , কখন এ কথা বলেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

                 দয়ালবাবুর লিচু বাগানে স্কুলের মাস্টারমশাই পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়ে আট আনা ঘুষ দিয়ে ছেলেদের ছাড়িয়ে আনার পরে পুলিশের আসল পরিচয় জানতে পেরে তখনই এই প্রশংসা সূচক মন্তব্য করেন। 

(১০) " বড়ো চমৎকার আজকে এই সন্ধ্যার চেহারা। "

-- সন্ধ্যার চেহারাটির বর্ণনা দাও। 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

            সেই সন্ধ্যার চাঁদের আলোর একটা স্নিগ্ধ ও শান্ত উজ্জ্বলতা চারদিকে ফুটে উঠেছিল।  ফুরফুর করে বাতাস বইছিল।  জগদীশবাবুর বাগানের গাছের পাতাগুলো ঝিরঝির শব্দ করছিল।  

(১১) " চমকে উঠলেন জগদীশবাবু। "

-- জগদীশবাবুর চমকে ওঠার কারণ কী ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

            আদুড় গায়ে, সাদা উত্তরীয় জড়ানো , ছোটো সাদা থান , মাথায় সাদা চুল , পায়ে ধুলো মাখা বিরাগীকে দেখে জগদীশবাবুর চমকে উঠলেন। 

(১২) " আমার অপরাধ হয়েছে। " 

--- কোন অপরাধের কথা বলা হয়েছে ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

             বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদাকে দেখে জগদীশবাবু নেমে এসে বিরাগীকে অভ্যর্থনা না-জানানোয় বিরাগী অসন্তুষ্ট হন।  সেই অসন্তোষকে শান্ত করতেই জগদীশবাবুর এমন উক্তি। 

(১৩) " না না , হরিদা নয়।  হতেই পারে না। "

--- বক্তা ও তার সঙ্গীদের এই বিশ্বাসের কারণ কী ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

         বিরাগীর গলার স্বর , মুখের ভাষা ও চোখের দৃষ্টির সঙ্গে হরিদার কোনো মিল না থাকায় বিরাগীকে বক্তা ও তার বন্ধুদের হরিদা বলে মনে করে নি।  

(১৪) " পরম সুখ" বলতে বিরাগী কী বুঝিয়েছেন ? 

উত্তরঃ 

সুবোধ ঘোষের লেখা 'বহুরূপী ' গল্পে বিরাগীর মতানুসারে , সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে অনন্তের সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে পারলেই 'পরমসুখ' লাভ করা যায়। 

(১৫) জগদীশবাবুকে বিরাগী কী উপদেশ দেন ? 

উত্তরঃ 

বিরাগী জগদীশবাবুকে বলেন , ধন -জন-যৌবন আসলে মোহময় বঞ্চনা।  মন-প্রাণ দিয়ে একজনের আপন হতে চেষ্টা করলে সৃষ্টির সব ঐশ্বর্যই লাভ করা যায়। 

(১৬) তীর্থযাত্রা সম্পর্কে বিরাগীর অভিমত কী ছিল ? 

উত্তরঃ 

জগদীশবাবু তীর্থ ভ্রমণের জন্য বিরাগীকে একশো টাকা দিতে চাইলে বিরাগী বলেন , মানুষের অন্তরেই ঈশ্বরের বাস , সকল তীর্থের মিলনস্থল।  তাই আলাদাভাবে তীর্থদর্শনের প্রয়োজনীয়তা নেই। 

(১৭) " চমকে ওঠে ভবতোষ। " --ভবতোষের চমকে ওঠার কারণ কী ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

               হরিদার বাড়িতে ঢুকে তার পোশাক ইত্যাদি দেখে ভবতোষরা বুঝতে পারল যে, হরিদাই আসলে বিরাগী।  তখন তারা চমকে ওঠে।  

(১৮) " তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়। " 

----- বক্তা কোন প্রসঙ্গে উক্তিটি করেছেন ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

     এক্ষেত্রে  বক্তা হলেন হরিদা।  জগদীশবাবু বিরাগীবেশী হরিদাকে প্ৰণামী দিতে গেলে তিনি তা নেন না।  কারণ সে বিরাগীর ছদ্মবেশে টাকা নিলে তাতে অভিনয়ের ঢং নষ্ট হয়।  

(১৯) " অনাদি বলে-  এটা কী কান্ড করলেন হরিদা ?"

---   এখানে কোন কাণ্ডের কথা বলেছেন ? 

উত্তরঃ উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

          গল্প অনুসারে বিরাগীর বেশধারী হরিদাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে জগদীশবাবু তাকে খাঁটি সন্ন্যাসী ভেবে একশো এক টাকা দিতে চাইলে বিরাগী-রূপী হরিদা তা হেলায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন।  এখানে সেই কাণ্ডের কথাই বলা হয়েছে।  

(২০) " আমি বিরাগী , রাগ নাম কোনো রিপু আমার নেই। "

---- বক্তার এ কথা বলার কারণ কী ? 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পের অংশ।

          এক প্রকৃত সন্ন্যাসী আসলে সমস্ত জৈবিক প্রবৃত্তিকে জয় করে।  তখন সে কাম - ক্রোধ -লোভ ইত্যাদি ষড়রিপুর আর বশবর্তী থাকে না।  বিরাগী - রূপী হরিদা সে-কথাই বলেছেন। 



















Friday, 26 August 2022

চিঠি -স্বামী বিবেকানন্দ

 অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর 

(১) 'কল্যাণীয়া মিস নোব্ল্   ' বলে সম্বোধন করে স্বামী বিবেকানন্দ যাঁকে চিঠি লিখেছেন তাঁর সম্পূর্ণ নাম কী ? 

উত্তরঃ 

'কল্যাণীয়া মিস নোব্ল্   ' বলে সম্বোধন করে স্বামী বিবেকানন্দ যাঁকে চিঠি লিখেছেন তাঁর সম্পূর্ণ নাম মার্গারেট এলিজাবেথ নোব্ল্  । 

(২) " স্টার্ডি -র একখানি চিঠি কাল পেয়েছি। " -- স্টার্ডি কে ? 

উত্তরঃ 

মি. ই. টি. স্টার্ডি ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের একজন ইংরেজ ভক্ত , যিনি স্বামীজিকে ইংল্যান্ডে বেদান্ত প্রচারে সহায়তা করেন।  

(৩) "...... তা তুমি ধারণা করতে পারো না। " --- কী ধারণা করতে না পারার কথা বলা হয়েছে ? 

উত্তরঃ 

স্বামীজি মিস নোব্ল্কে ভারতবর্ষের মানুষের দুঃখ , কুসংস্কার , দাসত্ব প্রভৃতির ব্যাপকতা সম্পর্কে ধারণা করতে না পারার  কথা বলেছেন।  

(৪) "...... এখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে। ....." ---- 

বিশ্বাস টি কী ?  

উত্তরঃ 

স্বামীজির দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে , ভারতের কাজে মিস  

নোবেলের এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে।  

(৫) ভারতের নারী সমাজের উন্নতির জন্য কেমন ব্যক্তির প্রয়োজন ? 

উত্তরঃ 

ভারতের নারী সমাজের উন্নতির জন্য একজন প্রকৃত সিংহীর মতো তেজস্বিনী নারীর প্রয়োজন।  

(৬) '.....  তুমি ঠিক সেইরূপ নারী , জেক আজ প্রয়োজন। " 

---- মিস নোব্ল্ -এর মধ্যে কোন গুণাবলীর লক্ষ্য  করে স্বামীজি এ কথা বলেছেন ? 

উত্তরঃ 

মিস নোব্ল্  -এর শিক্ষা , ঐকান্তিকতা , পবিত্রতা , অসীম ভালোবাসা , দৃঢ়তা ইত্যাদি গুণ লক্ষ্য করে স্বামীজি এই কথা বলেছেন।  

(৭) " কিন্তু বিঘ্নও আছে বহু " ----- কোন কাজে বিঘ্ন আছে ? বিঘ্নগুলি কী কী ? 

উত্তরঃ 

ভারতবর্ষের বিশেষত ভারতের নারীসমাজের সার্বিক উন্নয়নের কাজে প্রচুর বিঘ্ন আছে।  

                       ভারতবর্ষের দুঃখ , কুসংস্কার , দাসত্ব , জাতিভেদ , অস্পৃশ্যতা ইত্যাদি দেশের উন্নতির কাজে বিঘ্ন হয়ে দাঁড়াতে পারে। 

(৮)  মিস নোব্ল্ এদেশে এলে কীভাবে নিজেকে দেখতে 

পাবেন ? 

উত্তরঃ 

মিস নোব্ল্ এদেশে এলে নিজেকে অসংখ্য অর্ধ-উলঙ্গ নরনারীতে পরিবেষ্টিত দেখতে পাবেন। 

(৯) ভয়ে বা ঘৃণায় ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গদের কী করে ? 

উত্তরঃ 

ভয়ে বা ঘৃণায় ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গদের এড়িয়ে চলে। 

(১০) শ্বেতাঙ্গরা  ভারতীয়দের প্রতি কীরূপ মনোভাব পোষণ করে ? 

উত্তরঃ 

শ্বেতাঙ্গরা  ভারতীয়দের প্রতি অত্যন্ত ঘৃণার মনোভাব পোষণ করে। 

(১১) 'চিঠি ' গদ্যাংশে স্বামীজি ভারতবর্ষের জলবায়ু কেমন বলে বর্ণনা করেছেন ? 

উত্তরঃ 

ভারতবর্ষের জলবায়ু অত্যন্ত গ্রীষ্মপ্রধান।  এদেশের শীত ইউরোপের গ্রীষ্মের মতো আর দক্ষিণাঞ্চলে সর্বদাই আগুনের হলকা প্রবাহিত হয়।  

(১২) " এসব সত্ত্বেও যদি তুমি কর্মে প্রবৃত্ত হতে সাহস কর "

---- এখানে 'এসব' বলতে কোন সবের কথা বলা হয়েছে ? 

উত্তরঃ 

ভারতবর্ষের মানুষের দুঃখ , কুসংস্কার , দাসত্ব, অস্পৃশ্যতা , এখানকার গ্রীষ্মপ্রধান জলবায়ু এবং ইউরোপীয় সুখস্বাচ্ছন্দ্যের  অভাবের কথা বলা হয়েছে।  

(১৩) কর্মে ঝাঁপ দেওয়ার পরে সাফল্যের পাশাপাশি আর কী কী ঘটার সম্ভাবনা থাকতে পারে ? 

উত্তরঃ 

মানবসেবার কর্মে ঝাঁপ দেওয়ার পর সে কাজে বিফল হওয়ার এবং কর্মে বিরক্তি আসার সম্ভাবনা থাকতে পারে।  

(১৪) " মরদ কি বাত হাতি কা দাঁত " --- প্রবাদটির অর্থ লেখ। 

উত্তরঃ 

প্রবাদটির অর্থ হল , প্রকৃত মানুষ কথা দিলে সবরকমভাবে সেই কথা রাখার চেষ্টা করে , তার নড়চড় হয় না।  

(১৫) " আবার তোমাকে একটু সাবধান করা দরকার.........."

--- কী বিষয়ে উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে সাবধান করা দরকার ? 

উত্তরঃ 

ভারতে জনসেবামূলক কাজ করার ক্ষেত্রে মিস মুলার কিংবা অন্যের আশ্রয়ে না থেকে মিস নোব্ল্কে আত্মনির্ভর হতে হবে।  

(১৬) মিসেস সেভিয়ার কেমন মহিলা ? 

উত্তরঃ 

মিসেস সেভিয়ার অত্যন্ত ভালো ও স্নেহময়ী মহিলা।  স্বামীজি তাঁকে " নারীকুলের রত্নবিশেষ " বলে উল্লেখ করেছেন।  

(১৭) সেভিয়ার দম্পতি কেমন মানুষ ? 

উত্তরঃ 

সেভিয়ার দম্পতি ভারতবর্ষের মানুষকে ঘৃণা করেন না এবং ভারতীয়দের ওপর কর্তৃত্ব ফ্ল্যাটে তাঁরা এদেশে আসেননি।  

(১৮) স্বামীজি মিস নোব্ল্কে ম্যাকলাউড আর বুলের সঙ্গে এদেশে আসার পরামর্শ দিয়েছেন কেন ? 

উত্তরঃ 

মিস ম্যাকলাউড  ও মিসেস বুলের সঙ্গে এদেশে এলে মিস নোব্ল্-এর দীর্ঘপথের যাত্রার একঘেয়েমি দূর হতে পারে বলে স্বামীজি এই পরামর্শ দিয়েছেন। 

(১৯) মি. স্টার্ডির লেখা চিঠিটি কেমন ছিল ? 

উত্তরঃ 

মি. স্টার্ডির লেখা চিঠিটি ছিল বড়ো শুষ্ক , প্রাণহীন এবং হতাশাপূর্ণ। 

(২০) মি. স্টার্ডি হতাশ হয়েছিলেন কেন ? 

উত্তরঃ 

লন্ডনের কাজ পন্ড হওয়ায় মি. স্টার্ডি হতাশ হয়েছেন বলে তাঁর চিঠিতে সেই হতাশা ফুটে উঠেছিল। 









    











Friday, 5 August 2022

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি - শঙ্খ ঘোষ

 উৎস

"আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি" কবিতাটি " জলই পাষাণ হয়ে আছে " কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।  কাব্যটির রচনাকাল ২০০১-২০০৩  খ্রিষ্টাব্দ , প্রকাশ কাল ২০০৪। 

ভাববস্তু

" আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি " কবিতায় কবির যুদ্ধবিরোধী মনোভাব এবং যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ও হানাহানির পর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠনে সাধারণ মানুষদের এগিয়ে আসবার সদর্থক ভূমিকাটি ব্যক্ত হয়েছে।  যুদ্ধে হিংসা ও বিধ্বংসী আক্রমণের শিকার হয় সাধারণ মানুষ --- কেউ হয় বাস্তুহারা , কেউ বা সন্তানহারা।  নিজের পায়ে দাঁড়ানোর , নিজের উপার্জনের বলে দিনযাপনের ন্যূনতম সুযোগটুকুও তারা পে না।  প্রতি মুহূর্তে লড়াই করতে হয় মৃত্যুর সঙ্গে -- বোমারু বিমানের নিশানা থেকে বাঁচতে তাকে ক্রমশ পালিয়ে বেড়াতে হয়।  এইভাবেই সাধারণ মানুষের অস্তিত্ব কর্মে বিপন্নতার মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়। 

                         কবি এই নেতিবাচক , হতাশার কথা উচ্চারণের পাশাপাশি আলোচ্য কবিতায় এই সংকট থেকে পরিত্রাণলাভের পথটিও খুঁজতে চেয়েছেন।  তাঁর মতে একটা , মানুষে-মানুষে গভীর ঐক্যবোধ।  বিপদের দিনে সকলের হাতে হাত ধরে দাঁড়ানোর মানসিকতাই পারে যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীকে পুনরায় সকলের বাসযোগ্য করে তুলতে। যে-কজন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ রয়েছেন, কবির অনুরোধ তাঁরা সকলে মাইল যেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।  বিচ্ছিন্নতা নয় , বরং সকলের মিলিত উদ্যোগেই পৃথিবীতে পুনরায় মনুষ্যত্বের উদ্বোধন ঘটাবে।  যুদ্ধের আগুন পুড়িয়ে দেয় ঘরবাড়ি , পুড়িয়ে দেয় মানুষের সুকুমার প্রবৃত্তি ও সুস্থ মানসিকতা।  কবি চান , এই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হোক।  তিনি চান ভালোবাসা , আবেগ , বিশ্বাস দিয়ে গড়ে ওঠা নতুন পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে।  আর এভাবে বেঁচে থাকতে গেলে সকলের যূথবদ্ধ হয়ে থাকাটা খুব জরুরি বলে তিনি মনে করেন।  

Tuesday, 2 August 2022

ছুটি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 প্রশ্ন ও উত্তর 

১) বালকদের সর্দারের নাম কী ? 

উত্তরঃ ফটিক চক্রবর্তী 

(২) ফটিকের ভাইয়ের নাম কী ? 

উত্তরঃ মাখন চক্রবর্তী 

(৩) ফটিকের মামার নাম কী ? 

উত্তরঃ বিশ্বম্ভর বাবু 

(৪) মামা কোথায় কাজে গিয়েছিলেন ? 

উত্তরঃ পশ্চিমে 

(৫) প্রকান্ড শালকাঠটা কোথায় কেন পড়েছিল ? 

উত্তরঃ প্রকান্ড শালকাঠটা নদীর পাড়ে , মাস্তুলে পরিণত হওয়ার জন্য পড়েছিল।  

(৬) নৌকার গলুইয়ে বসে ফটিক কী চিবোচ্ছিল ?

উত্তরঃ ঘাস 

(৭) ফটিকের বয়স কত ছিল ? 

উত্তরঃ তেরো - চোদ্দ বছর 

(৮) ফটিকের মামা ফটিকের মাকে কী প্রস্তাব দিয়েছিল ? 

উত্তরঃ ফটিকের মামা বিশ্বম্ভর বাবু  ফটিককে তাঁর কাছে কোলকাতায় নিয়ে গিয়ে পড়াশোনা শেখাবেন বলেছিলেন।  

(৯) ফটিকের মামার কটি ছেলে মেয়ে ছিল ? 

উত্তরঃ তিনটি ছেলে। 


(১০) " তাহাই উপলব্ধি করিয়া বালকেরা এই প্রস্তাবে সম্পূর্ণ অনুমোদন করিল "  

(ক) কার লেখা , কোন গল্পের অংশ ? 

(খ) প্রসঙ্গ কী ? 

(গ) বক্তব্য কী ? 

উত্তরঃ 

(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "ছুটি" গল্পের অংশ।  

(খ) নদীর ধারে  একটি প্রকান্ড শালকাঠ মাস্তুল তৈরির জন্য কেউ ফেলে রেখেছিল।  ফটিক ও তার বন্ধুরা মিলে ঠিক করে সেটা সকলে মাইল নদীর জলে গড়িয়ে ফেলে দেবে।  এটা ভেবে তাদের আনন্দ হল যে সে লোকটা কার্যকালে কাঠটা না পেয়ে কীরূপ অসুবিধায় পড়বে - এই প্রসঙ্গেই প্রশ্নে উল্লিখিত এই  উক্তি।

(গ) বালকদের সর্দার ফটিক তার বন্ধুদের কাছে প্রস্তাব রাখে যে নদীর জলে শাল কাঠের গুঁড়িটা গড়িয়ে দেবে।  বালকেরা এই প্রস্তাব অনুমোদন করলে সকলে মাইল গুঁড়িটা গড়াতে আরম্ভ করে।  কিন্তু ফটিকের ছোটভাই মাখন  যখন সেই গুঁড়িটায় এসে বসে , খেলার আনন্দ মাটি হয়ে যায়।  

(১১) " তখন আর ফটিকের সহ্য হইল না "

-(ক) ফটিক কে ? 

(খ) তার কী সহ্য হল না ও কেন ? 

(গ) এরপর সে কী করে ? 

উত্তরঃ 

(ক) আলোচ্য অংশটিতে  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা " ছুটি" ছোটগল্পে বালকদের সর্দার ও গল্পের প্রধান চরিত্র ফটিক।  

(খ) নদীর ধারে পরে থাকা একটি প্রকান্ড শালকাঠের গুঁড়িকে নীচে গড়িয়ে দিয়ে মজা করে খেলার পরিকল্পনা করছিল ফটিক ও তার বন্ধুরা।  কিন্তু ফটিকের ভাই মাখন শালকাঠের গুঁড়ির ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে এসে বসে এবং বার বার  উঠে যেতে বললেও সে ওঠে না।  তখন গুঁড়িশুদ্ধ গড়াতেই তার বিপত্তি ঘটে। সে মাটিতে পড়ে যায়।  কিন্তু বাড়িতে ফিরে সে মায়ের কাছে মিথ্যে কথা বলে যে ফটিক তাকে মেরেছে। মায়ের কাছে এই মিথ্যে কথাটা ফটিকের সহ্য হল না।  

(গ) ফটিক তার মেক জানায় যে সে মাখনের গায়ে হাত তোলেনি।  মাখনকে পুনর্বার জিজ্ঞাসা করায় মাখন জানায় যে ফটিক তাকে মেরেছে।  মাখনের এই মিথ্যে কথা ফটিকের সহ্য হয় না।  সে মাখনের গালে সশব্দে এক চড় বসিয়ে দেয়।  মা এতে আরও রেগে গিয়ে ফটিককে মারে।  রগে ফটিক মাকে  ঠেলে দেয়। 

(১২) " বিধবা এ প্রস্তাবে সহজেই সম্মত হইলেন।  " 

(ক) বাক্যটি কোন রচনার অন্তর্গত ? লেখকের নাম কী ? 

(খ) বিধবা মহিলার পরিচয় দাও। 

(গ) বিধবা কোন প্রস্তাবে সহজেই সম্মত হলেন ? 

উত্তরঃ 

(ক) বাক্যটি "ছুটি " রচনার অন্তর্গত।  

                 লেখকের নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।  

(খ) বিধবা মহিলা হলেন ফটিক ও মাখনলালের মা।  

(গ) ফটিকের মা তাঁর ভাই বিশ্বম্ভর বাবুকে জানায় যে ফটিক অবাধ্য এবং লেখাপড়ায় অমনোযোগী।  একথা শোনার পর বিশ্বম্ভর বাবু ফটিককে  কোলকাতায় নিয়ে যাবার প্রস্তাব দেন।  মামার ইচ্ছা কোলকাতায় তিনি নিজ দায়িত্বে ফটিককে শিক্ষা দেবেন।  একথা শুনে ফটিকের মা সহজেই সম্মত হলেন।  

           ফটিকের মা ফটিককে নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলেন।  তাই তিনি ভেবেছিলেন ফটিক মামার বাড়িতে ঠিকমতো বড়ো হয়ে উঠুক , তাই তিনি বিশ্বম্ভর বাবুর প্রস্তাবে নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন।  

(১৩) " তেরো- চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নেই। "

---- সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা কর। 

উত্তরঃ 

উল্লিখিত অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'ছুটি' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।  

        'ছুটি' গল্পের প্রধান চরিত্র ফটিক একটি তের-চৌদ্দ বছরের বালক।  এই প্রসঙ্গে গল্পকথক উল্লিখিত উক্তিটি করেছেন। 

         তের-চৌদ্দ বছর বয়স এমনই যে অনেকের কাছেই তা বালাই বা ঝামেলা বলে মনে হয়।  এই বয়সে ছেলেমানুষী ভাব যেমন ন্যাকামি বলে লোকে মনে করে তেমনই একটু পরিণত বয়সের মতো কথাবার্তাকেও পাকামি বা জ্যাঠামিসুলভ আচরণ বলে বিরক্তিকর মনে করে। ছোট বয়সের মিষ্টতাও তাদের মধ্যে থাকে না , আবার দায়িত্বপালনে সক্ষম না হওয়ায় সংসারের কোন কাজেও লাগে না।  তাই লোকের মনে স্নেহ উদ্রেক করতেও তারা ব্যর্থ হয়।  আকারে বড় হয়ে উঠলেও আচরণে বা বুদ্ধিতে তারা পরিণত হয় না।  অহেতুক কৌতূহল অন্যের কাছে অসহ্য হয়ে ওঠে।  কৈশোর বয়সের এই অসহায়তার কথা বোঝাতেই গল্পকথক প্রশ্নে উল্লিখিত উক্তিটি করেছেন।  

(১৪) " এইটে ফটিকের সবচেয়ে বাজিত " 

(ক) ফটিক কে ? 

(খ) সে কোলকাতায় কার বাড়িতে এসেছিল এবং সেখানে তার অবস্থা কী হয়েছিল ? 

(গ) কোনটি তার সবচেয়ে বাজত এবং কেন ? 

উত্তরঃ 

(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা " ছুটি" ছোটগল্পে বালকদের সর্দার ও গল্পের প্রধান চরিত্র ফটিক।

(খ) ফটিক কোলকাতায় তার মামা  বিশ্বম্ভরবাবুর সঙ্গে  তার বাড়িতে এসেছিল।  ফটিককে নিজের কাছে রেখে লেখাপড়া শেখাবেন বলে তার মামা নিয়ে এসেছিল।  কিন্তু তার মামি ফটিকের এই মামাবাড়িতে আসাটা একদম পছন্দ করেন নি।  ফলে কোলকাতায় মামারবাড়িতে ফটিকের দিনগুলো অত্যন্ত অনাদরে ,অবহেলা ও স্নেহহীন ব্যবহারের মধ্যে অত্যন্ত মনোকষ্টের মধ্যে দিন কাটছিল। 

(গ) ফটিক তার মামাবাড়িতে এসে মামির ও বাড়ির সকলের মন জুগিয়ে চলার চেষ্টা করত।  তাই মামি কোন কাজ তাকে করতে বললে সে অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে করত।  কিন্তু মামির কাছ থেকে একটুও ভালোবাসা বা ভালো ব্যবহার সে পায় না।  মামির  চোখে  সে একটি দুর্গ্রহের মতো প্রতিভাত হত তাই মামির স্নেহহীন ব্যবহার ও অনাদর ফটিকের মনে সবচেয়ে বাজত। 

(১৫) " মা , এখন আমার ছুটি হয়েছে মা , এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি। " 

(ক) উল্লিখিত অংশটি কার কোন রচনা থেকে নেওয়া হয়েছে ? 

(খ) বক্তা কে ? এখানে বক্তা কোন ছুটির কথা বলেছে ? 

(গ) কেন তার অকালে ছুটি হল এবং এর জন্য কারা দায়ী ? 

উত্তরঃ 

(ক) উল্লিখিত অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ' ছুটি' ছোটগল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।  

(খ) বক্তা ফটিক জ্বরের ঘোরে প্রলাপের মধ্যে সে একথা বলে। ফটিকের জ্বর অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় সে প্রলাপের ঘোরে তার অবচেতন মনে যা জমে ছিল সেইগুলিই বলে চলে। ছুটিতে তার গ্রামে মার কাছে যাবার কথা তার বার বার মনে হয়েছে।  তাই মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে চিরছুটির দেশে যাত্রা করছে সে।  তাই সে মেক বলে তার ছুটি হয়ে গেছে ও সে চিরদিনের জন্য তার বাড়িতে চলে যাচ্ছে।  

(গ)  ফটিক গ্রামের সহজ সরল পরিবেশে বড়ো হয়ে উঠেছে।  মামার সঙ্গে সে নিজের ইচ্ছেতে কোলকাতায় এলেও মামার বাড়িতে মামীর স্নেহহীন ব্যবহার , সবার অবহেলা তাকে নিঃসঙ্গ করে তুলেছিল।  তাই কোলকাতায় চার দেওয়ালের মধ্যে কেবলই তার মা ও গ্রামের কথা মনে পড়ত। ছুটি হলে সে বাড়ি যেতে পারবে এই কথা অবচেতন মনে সারাক্ষণ ঘুরত।  একদিন তার জ্বর হয় কিন্তু তার অসুস্থতার জন্য সবার কাছে বিশেষত মামির কাছে তাকে কী পরিমাণ গঞ্জনা সহ্য করতে হবে সেটা বুঝতে পেরে সে একাই বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য বেড়িয়ে পড়ে।  রাস্তা না চেনা থাকায় স্বভাবতই ব্যর্থ হয়।  পুলিশ যখন তাকে খুঁজে মামার বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে যায় তখন আর কিছু করার ছিল না।  সবাইকে ছেড়ে সে চিরছুটির দেশে পাড়ি দেয়।  তার এই অকাল ছুটির জন্য তার মা, মামা, মামি , মামাতো ভাইয়েরা , স্কুলের শিক্ষক সবার স্নেহহীন ব্যবহার ও অনাদরই দায়ী। 


               







Monday, 25 July 2022

ছুটি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 গল্পের সারসংক্ষেপ


"ছুটি" গল্পটি ১২৯৯ বঙ্গাব্দের পৌষ সংখ্যার " সাধনা" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। গল্পটিতে এক পল্লীশিশুর  সূক্ষ্ম মনস্তত্ত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এবং শহরের কৃত্রিম আবহে পল্লীশিশুটির অকালমৃত্যু গল্পটিকে ভিন্ন মাত্রা দান করেছে।  

                            বালকদের সর্দার ফটিক নিত্য-নৈমিত্তিক খেলার নতুন নতুন পরিকল্পনা করে।  নতুন খেলার উদ্ভাবন করে সে আনন্দ পায়।  তাই নদীর ধরে পড়ে থাকা শালকাঠের গুঁড়িকে গড়িয়ে জলে ফেলে দিতে বন্ধুদের সঙ্গে মনস্থ করে।  ফটিকের সঙ্গে তার ভাই মাখনের একদমই বনিবনা হয় না।  ফটিকের বিধবা মা এক সংসার চালাতে ও দুটি ছেলেকে মানুষ করতে হিমসিম খায়।  ফটিক ও মাখনের ঝগড়ার সময় অধিকাংশ সময় বয়সে ছোট বলে মাখনের পক্ষ নেয় এবং ফটিককে বকে।  মাখন তাই সুযোগ পেলেই ফটিককে বিরক্ত করে।  তাই ফটিক ও তার বন্ধুরা যখন শালগাছের গুঁড়িটাকে নিয়ে একটু মজা করতে চায় তখন মাখন সেই শালগাছের গুঁড়িটার ওপর গিয়ে বসে পড়ে।  ফটিকের প্রস্তাবমতো মাখনকে সহ ঐ কাঠ গড়াতে গেলে মাখন পড়ে  যায়।  এতে রেগে গিয়ে মাখন  ফটিককে অন্ধভাবে মারতে থাকে।  মাখন কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে যায়।  এমন সময় একটি নৌকা ঘাটে এসে লাগে।  অর্ধবয়সী এক ভদ্রলোক চক্রবর্ত্তীদের বাড়ি কোথায় জানতে চাইলে ফটিক অনির্দিষ্টভাবে উত্তর দে 'ওই হোথা। ' পুনরায় প্রশ্ন করলে বলে 'জানিনে।' অচিরেই ফটিকের মা ফটিককে ডেকে পাঠান।  মাখনকে কেন্দ্র করে অশান্তি হয়।  মা ফটিককে প্রহার করেন।  ফটিক মাকে ঠেলে দেয়।  এমনসময় সেই অর্ধবয়সী ভদ্রলোক ঘরে ঢোকেন -- জানা যায় ইনি ফটিকের মামা বিশ্বম্ভরবাবু।  ফটিকের অবাধ্যতা ওপড়াশোনায় অমনোযোগের কথা বোনের কাছে শুনে বিশ্বম্ভরবাবু ফটিককে নিয়ে কলিকাতায়  রওনা হন।  কলিকাতায় মামীর সঙ্গে ফটিকের সম্পর্ক তেমন সুখের হয় না।  মামীর স্নেহহীন চোখে সে যে দুর্গ্রহের মতো প্রতিভাত হয় এতেই ছিল তার দুঃখ।  শুধু তাই নয় গ্রামের খোলামেলা প্রকৃতির কাছে জীবনযাপনের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি কলিকাতায় শহরের পরিবেশ তার কাছে  সদৃশ হয়ে ওঠে।  ফটিক এই অসহায় পরিস্থিতিতে মামাকে মার্ কাছে পৌঁছে দেবার জন্য বারংবার আবেদন করে।  মামা বলেন স্কুলের ছুটি হোক।  কিন্তু তার তখনো অনেক দেরি।  ফটিক এর মধ্যে বই হারিয়ে মামীর কাছে তিরস্কৃত হয়।  স্কুলের শিক্ষক, সহপাঠী এবং মামাতো ভাইদের কাছেও সে ক্রমাগত হেনস্থ হতে থাকে। সবার এই স্নেহহীন ব্যবহারে ফটিক খুব অসহায় বোধ করতে থাকে।  নিজের গ্রামের খোলা মাঠ আর মায়ের কথা তার সবসময় মনে পড়তে থাকে।  ক্রমেই অভিমান ফটিকের মনের মধ্যে ক্রমশ বাড়তে থাকে।  ফটিক প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হয়।  সে জানে তার এই অসুখ মামী ক্ষমা করবে না।  সে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়।  সেদিন প্রবল বর্ষণ।  অসুস্থ ফটিককে পুলিশের  লোক বাড়ি পৌঁছে দিয়ে যায়।  ফটিকের অসুস্থতা বৃদ্ধি পায়।  সে মায়ের প্রতীক্ষায় থাকে এবং বিড়বিড় করে বকতে থাকে , ' একবাঁও মেলে না।  দো বাঁও মেলে-এ -এ না। 'কলিকাতায় আসার পথে স্টিমারের খালাসিরা জল মাপছিল 'ফটিক প্রলাপে  তাহাদেরই অনুকরণে করুণস্বরে জল মাপিতেছে এবং যে অকূল সমুদ্রে যাত্রা করিতেছে , বালক রশি ফেলিয়া কোথাও তাহার তল পাইতেছে না। ' এমন সময়ে তার মা কাঁদতে কাঁদতে এসে পৌঁছায় , কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।  মায়ের ডাক শুনে ফটিক জানায় ' মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি। ' সবাইকে ছেড়ে সে চিরছুটির দেশে পাড়ি দেয়।  

                  
























পোস্টমাস্টার

প্রশ্ন ও উত্তর    (১) ' পোস্টমাস্টার' গল্পটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ?  উত্তরঃ  ' পোস্টমাস্টার' গল্পটি 'হিতবাদী' পত...