উৎস :
"আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি" কবিতাটি " জলই পাষাণ হয়ে আছে " কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। কাব্যটির রচনাকাল ২০০১-২০০৩ খ্রিষ্টাব্দ , প্রকাশ কাল ২০০৪।
ভাববস্তু :
" আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি " কবিতায় কবির যুদ্ধবিরোধী মনোভাব এবং যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ও হানাহানির পর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠনে সাধারণ মানুষদের এগিয়ে আসবার সদর্থক ভূমিকাটি ব্যক্ত হয়েছে। যুদ্ধে হিংসা ও বিধ্বংসী আক্রমণের শিকার হয় সাধারণ মানুষ --- কেউ হয় বাস্তুহারা , কেউ বা সন্তানহারা। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর , নিজের উপার্জনের বলে দিনযাপনের ন্যূনতম সুযোগটুকুও তারা পে না। প্রতি মুহূর্তে লড়াই করতে হয় মৃত্যুর সঙ্গে -- বোমারু বিমানের নিশানা থেকে বাঁচতে তাকে ক্রমশ পালিয়ে বেড়াতে হয়। এইভাবেই সাধারণ মানুষের অস্তিত্ব কর্মে বিপন্নতার মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়।
কবি এই নেতিবাচক , হতাশার কথা উচ্চারণের পাশাপাশি আলোচ্য কবিতায় এই সংকট থেকে পরিত্রাণলাভের পথটিও খুঁজতে চেয়েছেন। তাঁর মতে একটা , মানুষে-মানুষে গভীর ঐক্যবোধ। বিপদের দিনে সকলের হাতে হাত ধরে দাঁড়ানোর মানসিকতাই পারে যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীকে পুনরায় সকলের বাসযোগ্য করে তুলতে। যে-কজন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ রয়েছেন, কবির অনুরোধ তাঁরা সকলে মাইল যেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। বিচ্ছিন্নতা নয় , বরং সকলের মিলিত উদ্যোগেই পৃথিবীতে পুনরায় মনুষ্যত্বের উদ্বোধন ঘটাবে। যুদ্ধের আগুন পুড়িয়ে দেয় ঘরবাড়ি , পুড়িয়ে দেয় মানুষের সুকুমার প্রবৃত্তি ও সুস্থ মানসিকতা। কবি চান , এই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হোক। তিনি চান ভালোবাসা , আবেগ , বিশ্বাস দিয়ে গড়ে ওঠা নতুন পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে। আর এভাবে বেঁচে থাকতে গেলে সকলের যূথবদ্ধ হয়ে থাকাটা খুব জরুরি বলে তিনি মনে করেন।
No comments:
Post a Comment