(১) তোতাপাখিটি কেমন ছিল ?
উত্তরঃ
তোতাপাখিটি ছিল মূর্খ। সে গান গাইত। শাস্ত্র পড়ত না। সে মনের আনন্দে লাফাত , উড়ত। কায়দা-কানুন একেবারেই জানত না।
(২) তোতাপাখিটিকে দেখে রাজা কী বলেছিলেন ?
উত্তরঃ
রাজা বলেছিলেন তোতাপাখিটি কোন কাজে লাগে না। শুধু বনের ফল খেয়ে রাজহাটে ফলের বাজারে লোকসান ঘটায়।
(৩) ' পাখিটাকে শিক্ষা দাও ' .......... কে বলেছিলেন ?
উত্তরঃ
মন্ত্রীমশাই বলেছিলেন।
(৪) কাদের উপর ভার পড়ল পাখিটাকে শিক্ষা দেবার ?
উত্তরঃ
রাজার ভাগিনাদের উপর ভার পড়ল পাখিটাকে শিক্ষা দেবার।
(৫) পাখিটাকে শিক্ষা দেবার প্রয়োজন হয়েছিল কেন ?
উত্তরঃ
তোতা পাখিটি ছিল মূর্খ। সে কেবল মনের আনন্দে গান গাইত , লাফাত , উড়ত। কিছুই কায়দা - কানুন জানত না। রাজা মনে করেছিলেন পাখিটা কোন কাজে লাগে না। কেবল বনের ফল খেয়ে রাজহাটে ফলের বাজারে লোকসান ঘটায়। তাই পাখিটাকে শিক্ষা দেবার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।
(৬) পাখিটার অবিদ্যার কারণ কারা বিচার করে বার করেছিলেন ?
উত্তরঃ
পন্ডিতেরা বিচার করে পাখিটার অবিদ্যার কারণ বার করেছিলেন।
(৭) পন্ডিতেরা বিচার করে পাখিটির অবিদ্যার কারণ কী বলেছিলেন ? তার প্রতিকার কী বলেছিলেন ?
উত্তরঃ
পন্ডিতেরা বিচার করে বলেছিলেন তোতাপাখিটি সামান্য খড়কুটো দিয়ে যে নিজের বাসা বানায় সেই বাসায় বেশি বিদ্যা ধরে না। তাই পাখিটি মূর্খ।
পাখিটার জন্য ভালো একটি খাঁচা বানানোর দরকার। পন্ডিতেরা এই প্রতিকারই দিয়েছিলেন।
(৮) পন্ডিতেরা কী পেয়ে খুশি হয়ে বাসায় ফিরেছিলেন ?
উত্তরঃ
পন্ডিতেরা দক্ষিণা পেয়ে খুশি হয়ে বাসায় ফিরেছিলেন।
(৯) পাখিটির জন্য কীরকম খাঁচা কে বানিয়েছিল ?
উত্তরঃ
পাখিটির জন্য সোনার খাঁচা স্যাকরা বানিয়েছিল।
(১০) সোনার খাঁচা বানানোর জন্য স্যাকরা কী পেয়েছিল ?
উত্তরঃ
সোনার খাঁচা বানানোর জন্য স্যাকরা থলি বোঝাই করে বকশিশ পেয়েছিল।
(১১) ' খুশি হইয়া সে তখনি পাড়ি দিল বাড়ির দিকে '
(ক) কে খুশি হয়েছিল ?
(খ) কেন খুশি হয়েছিল ?
উত্তরঃ
(ক) স্যাকরা খুশি হয়েছিল।
(খ) তোতা পাখির জন্য স্যাকরা সোনার খাঁচা বানিয়ে দিয়েছিল। তাই সে থলি বোঝাই করে বকশিশ পেয়ে খুশি হয়েছিল।
(১২) কারা পাখিটিকে বিদ্যা শেখাতে বসেছিলেন ? তারা কী বলেছিলেন ?
উত্তরঃ
পন্ডিতেরা পাখিটিকে বিদ্যা শেখাতে বসেছিলেন।
তারা বলেছিলেন অল্প পুঁথির মাধ্যমে পাখিটিকে বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া যাবে না।
(১৩) পুঁথি লেখকদের কে তলব করেছিল ? ' তলব' কথার অর্থ কী ?
উত্তরঃ
পুঁথি লেখকদের রাজার ভাগিনা তলব করেছিল।
' তলব' কথাটির অর্থ 'ডেকে পাঠানো'।
(১৪) পুঁথি লেখকরা কী করেছিল ?
উত্তরঃ
পুঁথি লেখকরা পুঁথির নকল করে এবং নকলের নকল করে পর্বতপ্রমাণ পুঁথির স্তূপ তৈরি করেছিল।
(১৫) কাদের সংসারে আর টানাটানি রইল না ও কেন ?
উত্তরঃ
লিপিকরের দল পুঁথির নকল করার জন্য রাজার কাছ থেকে প্রচুর পারিতোষিক পেয়েছিল। তাই তাদের সংসারে আর টানাটানি রইল না।
(১৬) 'উন্নতি হইতেছে '
কিসের উন্নতি হচ্ছিল ও কীভাবে ?
উত্তরঃ
তোতাপাখিটির শিক্ষার উন্নতি হচ্ছিল।
তোতা পাখিটার জন্য বানানো অনেক দামের খাঁচাটির প্রতি ভাগিনাদের খবরদারির সীমা রইল না। খাঁচাটিকে ঝাড়া , মোছা , পালিশ করে মেরামত করে যত্ন করার জন্য অনেক লোক রাখা হল। আবার সেই লোকগুলির উপর নজর দেওয়ার জন্য আরো লোক রাখা হল। আবার সেই লোকগুলি উপর নজর দেওয়ার জন্য আরো লোক রাখা হল। পাখিটার খাঁচাটির এত যত্ন দেখে সকলে বলেছিল পাখিটার উন্নতি হচ্ছে।
( ১৭) " কথাটা রাজার কানে গেল "
-- কোন কথা রাজার কানে গেল ?
উত্তরঃ
নিন্দুকেরা বলেছিল যে তোতাপাখিটির জন্য যে খাঁচাটি বানানো হয়েছে তারই অনেক উন্নতি হয়েছে , দেখাশোনা হচ্ছে। কিন্তু তোতাপাখিটির খবর কেউ রাখে না। এই কথা রাজার কানে গিয়েছিল।
(১৮) ভাগিনাদের গলায় সোনার হার চড়ল কেন ?
উত্তরঃ
নিন্দুকদের সমালোচনা শুনে রাজার মনে তোতাপাখিটির শিক্ষা সম্পর্কে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। তখন তিনি ভাগিনাদের ডেকে আসল ঘটনা জানতে চান। ভাগিনা এসে রাজাকে বলে যে সত্য ঘটনা রাজামশাই স্যাকরা ,পন্ডিত ,লিপিকর,খাঁচাটির যারা তদারক করে তাদের থেকে জানতে পারবেন। রাজামশাই তখন খুশি হয়ে ভাগিনাকে সোনার হার উপহার দেন।
(১৯) রাজা কাদের নিয়ে পাখিটির শিক্ষাব্যবস্থা দেখতে গিয়েছিলেন ?
উত্তরঃ
রাজা পাত্র , মিত্র ও অমাত্য নিয়ে পাখিটির শিক্ষাব্যবস্থা দেখতে গিয়েছিলেন।
(২০) রাজামশাই দেউড়ির কাছে আসতেই কী হয়েছিল ?
উত্তরঃ
রাজামশাই দেউড়ির কাছে আসতেই শাঁখ -ঘন্টা , ঢাক-ঢোল , কাড়া -নাকাড়া, তূরী-ভেরি -দামামা , কাঁসি -বাঁশি -কাঁসর , খোল-করতাল , মৃদঙ্গ - জগঝম্প বিভিন্ন প্রকারের বাজনা বেজে উঠল। পন্ডিতেরা জোরে জোরে টিকি নেড়ে মন্ত্রপাঠ করতে লাগলেন। মিস্ত্রি ,মজুর ,স্যাকরা ,লিপিকর , তদারক-নবিশ আর মামাতো ,পিসতুতো ,খুড়তুতো এবং মাসতুতো ভাইরা জয়ধ্বনি দিতে লেগেছিল।
(২১) ' পাখিকে তোমরা কেমন শেখাও তার কায়দাটা দেখা চাই। '
(ক) কে কাকে বলেছেন ?
(খ) শেখানোর কায়দাটা কেমন ছিল ?
উত্তরঃ
(ক) প্রশ্নে উল্লিখিত কথাটি রাজা পন্ডিতমশাইকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন।
(খ) তোতাপাখিটির দানাপানি বন্ধকরে দেওয়া হয়েছিল। পন্ডিতের দল রাশি রাশি
পুঁথির পাতা ছিঁড়ে 'কলমের ডগা' দিয়ে সেগুলি খাঁচায় বন্দি পাখিটির মুখের মধ্যে জোর করে ঢুকিয়ে দিচ্ছিলেন। পাখির গান বন্ধ, এমনকি চিৎকার করার ফাঁকটুকুও ছিল না। এটাই ছিল পাখিকে শেখানোর কায়দা।
(২২) নিন্দুকের কান মিলে দিতে রাজা কাকে আদেশ দিয়েছিলেন ?
উত্তরঃ
নিন্দুকের কান মিলে দিতে রাজা কানমলা সর্দারকে আদেশ দিয়েছিলেন।
(২৩) 'এ কী বেয়াদবি '
(ক) কে বলেছে কথাগুলি ?
(খ) এখানে কার কোন বেয়াদবির কথা বলা হয়েছে ?
(গ) বেয়াদবির শাস্তি কী হয়েছিল ?
উত্তরঃ
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত "তোতাকাহিনী " গল্পে কোতোয়াল বলেছে কথাগুলি।
(খ) এখানে তোতাপাখিটার বেয়াদবির কথা বলা হয়েছে।
শিক্ষাদানের বিপুল আড়ম্বরের চাপে অর্ধমৃত তোতাপাখিটা প্রতিবাদস্বরূপ মাঝে মাঝে সকালের আলোর দিকে তাকিয়ে ডানা ঝাপটাতে শুরু করেছিল। তারপর বন্ধনমুক্তির মরিয়া চেষ্টায় একদিন সে তার শীর্ণ ঠোঁট দিয়ে খাঁচার শলা কাটতে উদ্যত হয়। এই কাজকেই কোতোয়াল বেয়াদবি বলে মনে করেছে।
(গ) তোতাপাখির এই বেয়াদবির শাস্তি স্বরূপ কামারকে ডেকে তার পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আর পাখা দুটিও দেওয়া হয়েছিল ছেঁটে।
(২৪) কী দেখে সবাই বুঝতে পারল তোতাপাখিটার শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে ?
উত্তরঃ
প্রচন্ড শিক্ষার পীড়নে যখন তোতাপাখিটার সমস্ত চঞ্চলতা , আনন্দের প্রকাশ একেবারে স্তব্ধ হয়ে গেল তখনই রাজার ভাগিনারা সিদ্ধান্ত করেছে যে পাখির শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে। পাখিটা আর আগের মত লাফায় না , ওড়ে না , গান গায় না , খিদে পেলে চেঁচায় না। অর্থাৎ স্বাভাবিক প্রাণ চাঞ্চল্যের কোন প্রকার বহিঃপ্রকাশ আর তার মধ্যে দেখা যায় না। এই অচঞ্চল প্রাণহীন অবস্থাই রাজা , ভাগিনা ও পন্ডিতবর্গের কাছে প্রকৃত শিক্ষার লক্ষণ। তাই মৃত তোতাপাখীটিকে দেখে সবাই বলল পাখিটির শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে।
(২৫) পাখিটি মরে যাওয়ায় কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ?
উত্তরঃ
তোতাপাখিটি মরে যাওয়ায় বাইরে দখিনা হাওয়ায় কচিপাতাগুলি পুষ্পিত অরণ্যের আকাশকে বেদনায় আকুল করে তুলেছিল।
####
'কাহিনী' বা 'কাহিনি ' এই দুটি বানান ই আমার মতে সঠিক। কারণ মূল গ্রন্থে আছে
"তোতাকাহিনী" (বিশ্বভারতী থেকে যেটি প্রকাশিত ) আবার বর্তমানে " কাহিনী" বানান লেখা হয় "কাহিনি ' .... সুতরাং দুটি বানান ই আমি আমার লেখায় ব্যবহার করেছি।