Monday, 31 May 2021

তোতাকাহিনী

 (১) তোতাপাখিটি  কেমন ছিল ? 

উত্তরঃ  

তোতাপাখিটি ছিল মূর্খ।  সে গান গাইত।  শাস্ত্র পড়ত না।  সে মনের আনন্দে লাফাত , উড়ত।  কায়দা-কানুন একেবারেই জানত না।  

(২) তোতাপাখিটিকে দেখে রাজা কী বলেছিলেন ? 

উত্তরঃ

 রাজা বলেছিলেন তোতাপাখিটি কোন কাজে লাগে না।  শুধু বনের ফল খেয়ে রাজহাটে ফলের বাজারে লোকসান ঘটায়।  

(৩) ' পাখিটাকে শিক্ষা দাও ' .......... কে বলেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

মন্ত্রীমশাই বলেছিলেন। 

(৪) কাদের উপর ভার পড়ল পাখিটাকে শিক্ষা দেবার ? 

উত্তরঃ 

রাজার ভাগিনাদের উপর ভার পড়ল পাখিটাকে শিক্ষা দেবার।  

(৫) পাখিটাকে শিক্ষা দেবার প্রয়োজন হয়েছিল কেন ? 

উত্তরঃ

 তোতা পাখিটি ছিল মূর্খ।  সে কেবল মনের আনন্দে গান গাইত , লাফাত , উড়ত।  কিছুই কায়দা - কানুন জানত না।  রাজা মনে করেছিলেন পাখিটা কোন কাজে লাগে না।  কেবল বনের ফল খেয়ে রাজহাটে ফলের বাজারে লোকসান ঘটায়।  তাই পাখিটাকে শিক্ষা দেবার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।  

(৬) পাখিটার অবিদ্যার কারণ কারা  বিচার করে বার করেছিলেন ?  

উত্তরঃ 

পন্ডিতেরা বিচার করে পাখিটার অবিদ্যার কারণ বার করেছিলেন।  

(৭) পন্ডিতেরা বিচার করে পাখিটির অবিদ্যার কারণ কী বলেছিলেন ? তার প্রতিকার কী বলেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

পন্ডিতেরা বিচার করে বলেছিলেন তোতাপাখিটি সামান্য খড়কুটো দিয়ে যে নিজের বাসা বানায় সেই বাসায় বেশি বিদ্যা ধরে না।  তাই পাখিটি মূর্খ। 

                     পাখিটার জন্য ভালো একটি খাঁচা বানানোর দরকার।  পন্ডিতেরা এই প্রতিকারই দিয়েছিলেন।  

(৮) পন্ডিতেরা কী পেয়ে খুশি হয়ে বাসায় ফিরেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

পন্ডিতেরা দক্ষিণা পেয়ে খুশি হয়ে বাসায় ফিরেছিলেন।  

(৯) পাখিটির জন্য কীরকম  খাঁচা কে বানিয়েছিল ? 

উত্তরঃ 

পাখিটির জন্য সোনার খাঁচা স্যাকরা বানিয়েছিল। 

(১০) সোনার খাঁচা বানানোর জন্য স্যাকরা কী পেয়েছিল ? 

উত্তরঃ 

সোনার খাঁচা বানানোর জন্য স্যাকরা থলি বোঝাই করে বকশিশ   পেয়েছিল।  

(১১) ' খুশি হইয়া সে তখনি পাড়ি দিল বাড়ির দিকে '

(ক) কে খুশি হয়েছিল ? 

(খ) কেন খুশি হয়েছিল ? 

উত্তরঃ 

(ক)  স্যাকরা খুশি হয়েছিল। 

(খ) তোতা পাখির জন্য স্যাকরা সোনার খাঁচা বানিয়ে দিয়েছিল।  তাই সে থলি বোঝাই করে বকশিশ  পেয়ে খুশি হয়েছিল।  

(১২) কারা পাখিটিকে বিদ্যা শেখাতে বসেছিলেন ? তারা কী বলেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

পন্ডিতেরা পাখিটিকে বিদ্যা শেখাতে বসেছিলেন।  

                   তারা বলেছিলেন অল্প পুঁথির মাধ্যমে পাখিটিকে বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া যাবে না।  

(১৩) পুঁথি লেখকদের কে তলব করেছিল ? ' তলব' কথার অর্থ কী ? 

উত্তরঃ 

পুঁথি লেখকদের রাজার ভাগিনা তলব করেছিল।  

                       ' তলব' কথাটির অর্থ 'ডেকে পাঠানো'।

(১৪) পুঁথি লেখকরা কী করেছিল ? 

উত্তরঃ 

পুঁথি লেখকরা পুঁথির নকল করে এবং নকলের নকল করে পর্বতপ্রমাণ পুঁথির স্তূপ তৈরি করেছিল।  

(১৫) কাদের সংসারে আর টানাটানি রইল না ও কেন ? 

উত্তরঃ 

লিপিকরের দল পুঁথির নকল করার জন্য রাজার কাছ থেকে প্রচুর পারিতোষিক পেয়েছিল।  তাই তাদের সংসারে আর টানাটানি রইল না।  

(১৬) 'উন্নতি হইতেছে ' 

কিসের উন্নতি হচ্ছিল ও কীভাবে ? 

উত্তরঃ 

তোতাপাখিটির শিক্ষার উন্নতি হচ্ছিল। 

              তোতা পাখিটার জন্য বানানো অনেক দামের খাঁচাটির প্রতি ভাগিনাদের খবরদারির সীমা রইল না।  খাঁচাটিকে ঝাড়া , মোছা , পালিশ করে মেরামত করে যত্ন করার জন্য অনেক লোক রাখা হল।  আবার সেই লোকগুলির উপর নজর দেওয়ার জন্য আরো লোক রাখা হল।  আবার সেই লোকগুলি উপর নজর দেওয়ার জন্য আরো লোক রাখা হল।  পাখিটার খাঁচাটির  এত যত্ন দেখে সকলে বলেছিল পাখিটার উন্নতি হচ্ছে।  

( ১৭) " কথাটা রাজার কানে গেল "

-- কোন কথা রাজার কানে গেল ? 

উত্তরঃ 

নিন্দুকেরা বলেছিল যে তোতাপাখিটির জন্য যে খাঁচাটি বানানো হয়েছে তারই অনেক উন্নতি হয়েছে , দেখাশোনা হচ্ছে। কিন্তু তোতাপাখিটির খবর কেউ রাখে না।  এই কথা রাজার কানে গিয়েছিল।  

(১৮) ভাগিনাদের গলায় সোনার হার চড়ল কেন ? 

উত্তরঃ

 নিন্দুকদের সমালোচনা শুনে রাজার মনে তোতাপাখিটির শিক্ষা সম্পর্কে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল।  তখন তিনি ভাগিনাদের ডেকে আসল ঘটনা জানতে চান।  ভাগিনা এসে রাজাকে বলে যে সত্য ঘটনা রাজামশাই স্যাকরা ,পন্ডিত ,লিপিকর,খাঁচাটির যারা তদারক করে তাদের থেকে জানতে পারবেন।  রাজামশাই তখন খুশি হয়ে ভাগিনাকে সোনার হার উপহার দেন।  

(১৯) রাজা কাদের নিয়ে পাখিটির শিক্ষাব্যবস্থা দেখতে গিয়েছিলেন ? 

উত্তরঃ 

রাজা পাত্র , মিত্র ও অমাত্য নিয়ে পাখিটির শিক্ষাব্যবস্থা দেখতে গিয়েছিলেন।  

(২০) রাজামশাই দেউড়ির কাছে আসতেই কী  হয়েছিল ? 

উত্তরঃ

 রাজামশাই দেউড়ির কাছে আসতেই শাঁখ -ঘন্টা , ঢাক-ঢোল , কাড়া -নাকাড়া, তূরী-ভেরি -দামামা , কাঁসি -বাঁশি -কাঁসর , খোল-করতাল , মৃদঙ্গ - জগঝম্প  বিভিন্ন প্রকারের বাজনা বেজে উঠল।  পন্ডিতেরা জোরে জোরে টিকি নেড়ে মন্ত্রপাঠ করতে লাগলেন। মিস্ত্রি ,মজুর ,স্যাকরা ,লিপিকর , তদারক-নবিশ আর মামাতো ,পিসতুতো ,খুড়তুতো এবং মাসতুতো ভাইরা জয়ধ্বনি দিতে লেগেছিল।  

(২১) ' পাখিকে তোমরা কেমন শেখাও তার কায়দাটা দেখা চাই। '

(ক) কে কাকে বলেছেন ? 

(খ) শেখানোর কায়দাটা কেমন ছিল ? 

উত্তরঃ

(ক) প্রশ্নে উল্লিখিত কথাটি রাজা পন্ডিতমশাইকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন। 

(খ) তোতাপাখিটির দানাপানি বন্ধকরে দেওয়া হয়েছিল।  পন্ডিতের দল রাশি রাশি 

পুঁথির পাতা ছিঁড়ে 'কলমের ডগা' দিয়ে সেগুলি খাঁচায় বন্দি পাখিটির মুখের মধ্যে জোর করে ঢুকিয়ে দিচ্ছিলেন।  পাখির গান বন্ধ, এমনকি চিৎকার করার ফাঁকটুকুও ছিল না।  এটাই ছিল পাখিকে শেখানোর কায়দা।  

(২২) নিন্দুকের কান মিলে দিতে রাজা কাকে আদেশ দিয়েছিলেন ? 

উত্তরঃ 

নিন্দুকের কান মিলে দিতে রাজা কানমলা সর্দারকে আদেশ দিয়েছিলেন।  

(২৩) 'এ কী বেয়াদবি ' 

(ক) কে বলেছে কথাগুলি ? 

(খ) এখানে কার কোন বেয়াদবির কথা বলা হয়েছে ? 

(গ) বেয়াদবির শাস্তি কী হয়েছিল ? 

উত্তরঃ 

(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত "তোতাকাহিনী " গল্পে কোতোয়াল বলেছে কথাগুলি।  

(খ) এখানে তোতাপাখিটার বেয়াদবির কথা বলা হয়েছে।  

                     শিক্ষাদানের বিপুল আড়ম্বরের চাপে  অর্ধমৃত  তোতাপাখিটা প্রতিবাদস্বরূপ  মাঝে মাঝে সকালের আলোর দিকে তাকিয়ে ডানা ঝাপটাতে শুরু করেছিল।  তারপর বন্ধনমুক্তির মরিয়া চেষ্টায় একদিন সে তার শীর্ণ ঠোঁট দিয়ে খাঁচার শলা কাটতে উদ্যত হয়।  এই কাজকেই কোতোয়াল বেয়াদবি বলে মনে করেছে।  

(গ) তোতাপাখির এই বেয়াদবির শাস্তি স্বরূপ কামারকে ডেকে তার পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আর পাখা দুটিও দেওয়া হয়েছিল ছেঁটে।  

(২৪) কী দেখে সবাই বুঝতে পারল তোতাপাখিটার শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে ? 

উত্তরঃ 

প্রচন্ড শিক্ষার পীড়নে যখন তোতাপাখিটার সমস্ত চঞ্চলতা , আনন্দের প্রকাশ একেবারে স্তব্ধ হয়ে গেল তখনই রাজার ভাগিনারা সিদ্ধান্ত করেছে যে পাখির শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে।  পাখিটা আর আগের মত লাফায় না , ওড়ে না , গান গায় না , খিদে পেলে চেঁচায় না।  অর্থাৎ স্বাভাবিক প্রাণ চাঞ্চল্যের কোন প্রকার বহিঃপ্রকাশ আর তার মধ্যে দেখা যায় না।  এই অচঞ্চল প্রাণহীন অবস্থাই রাজা , ভাগিনা ও পন্ডিতবর্গের কাছে প্রকৃত শিক্ষার লক্ষণ।  তাই মৃত তোতাপাখীটিকে দেখে সবাই বলল পাখিটির শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে।  

(২৫) পাখিটি মরে যাওয়ায় কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ? 

উত্তরঃ 

তোতাপাখিটি মরে যাওয়ায় বাইরে দখিনা হাওয়ায় কচিপাতাগুলি পুষ্পিত অরণ্যের আকাশকে বেদনায় আকুল করে তুলেছিল।  



####

'কাহিনী' বা 'কাহিনি ' এই দুটি বানান ই আমার মতে সঠিক।  কারণ মূল গ্রন্থে আছে  

"তোতাকাহিনী" (বিশ্বভারতী থেকে যেটি প্রকাশিত )  আবার বর্তমানে " কাহিনী" বানান লেখা হয় "কাহিনি ' .... সুতরাং দুটি বানান ই আমি আমার লেখায় ব্যবহার করেছি।  


























Sunday, 9 May 2021

বিষম বিপত্তি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 পাঁচদিন ভাত নেই ,

দুধ এক রত্তি -

জ্বর গেল , যায় না যে 

তবু তার পথ্যি।  

সেই চলে জল সাবু ,

সেই ডাকতার বাবু 

কাঁচা কুলে আমড়ায় 

তেমনি আপত্তি।  

ইস্কুলে যাওয়া নেই 

সেইটে যা মঙ্গল- 

পথ খুঁজে ঘুড়ি নেকো 

গণিতের জঙ্গল।

কিন্তু যে বুক ফাটে 

দূর থেকে দেখি মাঠে 

ফুটবল ম্যাচে জমে

 ছেলেদের দঙ্গল। 

কিনুরাম পন্ডিত 

মনে পড়ে তাকে তার ,

সমান ভীষণ জানি 

চুনিলাল ডাকতার। 

খুলে ওষুধের ছিপি 

হেসে আসে টিপিটিপি ,

দাঁতের পাটিতে দেখি 

দুটো দাঁত ফাঁক তার।  

জ্বর বাঁধে ডাকতারে , 

পালাবার পথ নেই;

প্রাণ করে হাঁসফাঁস 

যত  থাকি যত্নেই।  

জ্বর গেলে মাস্টারে 

গিঁঠ দেয় ফাঁসটারে ,

আমারে ফেলেছে সেরে 

এই দুটি রত্নেই।  

প্রশ্ন ও উত্তর : 

(১) "বিষম বিপত্তি " কবিতাটি কে লিখেছেন

উত্তরঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর "বিষম বিপত্তি " কবিতাটি  লিখেছেন। 

(২) পথ্যি কাকে বলে ? 

উত্তরঃ রোগীর পক্ষে উপযুক্ত খাদ্য়কে পথ্যি বলে।  

(৩) ছেলেটি ক-দিন ধরে ভাত খেতে পারছে না ? 

উত্তরঃ ছেলেটি  পাঁচ দিন ধরে ভাত খেতে পারছে না। 

(৪) ভাতের বদলে তাকে কী খেতে হচ্ছে ? 

উত্তরঃ ভাতের বদলে তাকে জল সাবু  খেতে হচ্ছে।  

(৫) ডাক্তারবাবুর কীসে খুব আপত্তি ? 

উত্তরঃ কাঁচা কুল ও আমড়ায় ডাক্তারবাবুর খুব আপত্তি।  

(৬) 'মঙ্গল ' কীসে ? 

উত্তরঃ স্কুলে যেতে হচ্ছে না ,তাতেই যা মঙ্গল।  

(৭) কার টাকের কথা বলা হয়েছে ? 

উত্তরঃ কিনুরাম পন্ডিতের টাকের কথা বলা হয়েছে।  

(৮) ডাক্তারবাবুর নাম কী ? 

উত্তরঃ ডাক্তারবাবুর নাম চুনিলাল।  

(৯) জ্বর হওয়ার জন্য ছেলেটি কী কী অসুবিধা ও কষ্টের মধ্যে পড়েছিল ? 

উত্তরঃ জ্বর হওয়ার জন্য ছেলেটিকে পথ্যি হিসেবে  শুধু জল-সাবু খেতে হচ্ছিল। কাঁচা কুল ও আমড়া যা তার খুব প্রিয় তা খেতে পারছিল না।  বিকেলে খেলার মাঠে ফুটবল ম্যাচও সে খেলতে যেতে পারছিল না।  

বোধমূলক প্রশ্নোত্তর : 

(১০) " ইস্কুলে যাওয়া নেই 

                 সেইটে যা মঙ্গল --"

(ক) উল্লিখিত অংশটি কোন কবিতার অংশ ? কার লেখা ? 

(খ) কাকে ইস্কুলে যেতে হচ্ছে না ও কেন ? 

(গ) ইস্কুল যেতে হচ্ছে না বলে 'মঙ্গল' কেন ? 

উত্তরঃ 

(ক) উল্লিখিত অংশটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা " বিষম বিপত্তি " কবিতার অংশ। 

(খ) ছোট ছেলেটির জ্বর হয়েছে , তাই তাকে  ইস্কুল যেতে হচ্ছে না।  

(গ) ইস্কুল যেতে হচ্ছে না বলে তাকে অঙ্ক করতে হচ্ছে না , তাই তার কাছে এটা 'মঙ্গল' বলে মনে হচ্ছে।  













Tuesday, 27 April 2021

দেবতার বিদায়

 দেবতার বিদায় 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

দেবতা মন্দির মাঝে ভকত প্রবীণ 

জপিতেছে জপমালা বসি নিশিদিন 

হেনকালে সন্ধ্যাবেলা ধূলিমাখা দেহে 

বস্ত্রহীন জীর্ণ দীন পশিল সে গেহে 

কহিল কাতর কন্ঠে , " গৃহ মোর নাই,

একপাশে দয়া করে দেহ মোরে ঠাঁই। " 

সসংকোচে ভক্তবর কহিলেন তারে ,

" আরে আরে অপবিত্র , দূর হয়ে যা রে।  " 

সে কহিল," চলিলাম "- চক্ষের নিমেষে 

ভিখারি ধরিল মূর্তি দেবতার বেশে। 

ভক্ত কহে, " প্রভু মোরে কী ছল ছলিলে। "

দেবতা কহিল , " মোরে দূর করি দিলে। 

জগতে দরিদ্ররূপে ফিরি দয়াতরে 

গৃহহীনে গৃহ  দিলে আমি থাকি ঘরে। " 

উৎস : " দেবতার বিদায় " কবিতাটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত " চৈতালি " কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।  

কবিতা সংক্ষেপ : দেবমন্দিরে এক প্রবীণ ভক্ত দেবতার নাম জপ করেন রাতদিন।  একদিন সন্ধ্যায় সেখানে আসে এক দীন দরিদ্র মানুষ।  সে ভক্তকে জানালো যে , সে আশ্রয়হীন এবং অনুরোধ করল - তাকে মন্দিরের এক কোণে আশ্রয় দেওয়ার জন্য।  খালি গায়ে ধুলোমাখা অত্যন্ত রোগা মানুষটিকে দেখে সসংকোচে প্রবীণ ভক্ত তাকে অপবিত্র বলে মন্দির থেকে চলে যেতে বলেন।  মুহূর্তের মধ্যে সেই " অপবিত্র " ভিখারি দেবতার বেশ ধারণ করলেন। ভক্ত তখন কেঁদে জানালেন , --- প্রভু কেন তাকে এমনভাবে ছলনা করলেন ! দেবতা বলেন -- তিনি পৃথিবীতে দীনবেশেই ঘুরে বেড়ান।  যেখানে দীন , দরিদ্র আশ্রয় পায় , সেখানে তিনি অবস্থান করেন।  

   কবিতার মূলভাব : 

মানুষের মধ্যেই ঈশ্বর বিরাজমান।  অসহায় মানুষকে সেবার মধ্য দিয়েই দেবতাকে লাভ করা যায়।  

" জীবে প্রেম করে যেই জন 

সেইজন সেবিছে ঈশ্বর " 

মানুষকে অস্পৃশ্য ও অশুচি বলে ঘৃণা করলে দেবতাকে পাওয়া যায় না।  প্রবীণ ভক্ত এ ব্যাপারে অন্ধ ছিলেন।  তাই ধূলো কাদা মাখা আশ্রয়হীনের কাতর প্রার্থনাকে উপেক্ষা করে তিনি তাকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।  প্রকৃতপক্ষে তিনি দেবতাকেই বিদায় দিয়েছিলেন।  

প্রশ্ন : 

১।  " দেবতার বিদায় " কবিতাটি কোন  কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ? 

উত্তরঃ  " দেবতার বিদায় " কবিতাটি ' চৈতালি ' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।  

২।  ভক্ত সারাদিন কোথায় কী করছেন ? 

উত্তরঃ ভক্ত সারাদিন মন্দিরে বসে জপমালা নিয়ে ঠাকুরের নাম জপ করছে।  

৩।  সন্ধ্যাবেলা মন্দিরে কে প্রবেশ করেছিল ? 

উত্তরঃ সন্ধ্যাবেলা মন্দিরে দেবতা  দীন -হীন নিরাশ্রয় ভিখারির রূপ ধরে  প্রবেশ করেছিল। 

৪।  ভক্ত তার সঙ্গে কীরূপ ব্যবহার করলেন ? 

উত্তরঃ ভক্ত তাকে ' অপবিত্র ' বলে তিরস্কার করে মন্দির থেকে দূর করে দিলেন।  

(৫) ভিখারি কার রূপ ধারণ করেছিল ? 

উত্তরঃ ভিখারি চোখের পলকে দেবতার রূপ ধারণ করেছিল। 

(৬) জপমালা কাকে বলে ? 

উত্তরঃ যে মালার গুটিকা বা পুঁতি গুনে গুনে ঠাকুরের নাম জপ করা হয় তাকে জপমালা বলে।  

(৭) দেবতার গৃহ বলতে কী বোঝায় ? 

উত্তরঃ সাধারণভাবে দেবতার গৃহ বলতে মন্দির বোঝায়।  দেবতার প্রকৃত গৃহ বলতে বোঝায় যেখানে  মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আছে।

(৮) দেবতার সেবা হয় কীসে ? 

উত্তরঃ দরিদ্র মানুষের সেবাতেই হয় প্রকৃত দেব-সেবা। মানুষের মধ্যেই দেবতার অধিষ্ঠান। তাই মানুষের সেবা করলে , বিপন্ন মানুষকে রক্ষা করলে দেবতা প্রীত হন।  সেইজন্য দেবসেবার শ্রেষ্ঠ উপায় মানবসেবা।  

(৯) দেবতা ছলনা করে ভক্তকে কী শিক্ষা দিয়েছিলেন ? 

উত্তরঃ দেবতা ছলনা করে ভক্তকে শিক্ষা  দিতে চেয়েছিলেন যে , " জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। " মানুষকে ঘৃণা করলে দেবতাকেই ঘৃণা করা হয়।  মানুষকে কাছে টেনে না নিলে দেবতাকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়।  

(১০) ভক্ত কহে -" প্রভু মোরে কী ছল ছলিলে !" 

(ক) ভক্ত কে ? 

(খ) সে কি প্রকৃতই ভক্ত ? 

(গ) 'প্রভু ' বলতে এখানে কাকে বোঝানো হয়েছে ? 

উত্তরঃ 

(ক) এক দেবমন্দিরে নিশিদিন জপমালা নিয়ে নাম জপকারী একজন প্রবীণ পূজারি  এখানে ভক্ত। 

(খ) প্রবীণ ভক্তের অন্তরে দেবতার জন্য অনেক ভক্তি আছে কিন্তু তিনি তাঁর দেবতাকে চেনেন না।  প্রকৃত ভক্ত তাই করতে চেষ্টা করে যা তাঁর দেবতা চান।  কারণ ভক্তের কাজই প্রভুকে সন্তুষ্ট করা।  ওই প্রবীণ ভক্ত তা করতে পারেন নি বা করতে চাননি।  তাই তিনি প্রকৃত ভক্ত নন।  তিনি দেবতাকে চিনতে পারেন নি।  

(গ) 'প্রভু ' বলতে এখানে দেবতাকে অর্থাৎ ঈশ্বরকে বোঝানো হয়েছে।  






  







 




Sunday, 25 April 2021

বিড়াল ও টুনটুনির গল্প - উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী




 প্রশ্ন ও উত্তর 

(১) গৃহস্থের ঘরের পিছনে কী গাছ ছিল ? 

উত্তরঃ গৃহস্থের ঘরের পিছনে বেগুন গাছ ছিল। 

(২) টুনটুনি কীভাবে বাসা বেঁধেছে ? 

উত্তরঃ  বেগুন   গাছের  পাতা ঠোঁট  সেলাই করে টুনটুনি পাখি তার বাসা বেঁধেছে।  

(৩) বাসার ভিতরে ছানারা কী করত ? 

উত্তরঃ বাসার ভিতরে ছানারা খালি হাঁ  করে আর চিঁ চিঁ করত। 

(৪) গৃহস্থের বিড়ালটা কীরকম ? 

উত্তরঃ গৃহস্থের বিড়ালটা ভারি দুষ্টু। 

(৫) গৃহস্থের বিড়ালটা কী ভাবত ? 

উত্তরঃ গৃহস্থের বিড়ালটা  কী করে  টুনটুনির ছানা খাবে ভাবত। 

(৬) টুনটুনির ব্যবহারে বিড়ালনী খুশি হত কেন ? 

উত্তর : টুনটুনি রোজ বিড়ালনীকে প্রণাম করত আর মহারানি বলত , তাই টুনটুনির ব্যবহারে বিড়ালনী খুশি হত।  

(৭) টুনটুনির বাচ্ছারা উড়ে কোন গাছের ডালে বসেছিল ? 

উত্তরঃ  টুনটুনির বাচ্চারা উড়ে তালগাছের ডালে বসেছিল।  

(৮) বেগুনগাছে কে কীভাবে বাসা বেঁধেছিল ? 

উত্তরঃ বেগুনগাছের পাতা ঠোঁট দিয়ে সেলাই করে টুনটুনি পাখি তার বাসা বেঁধেছিল।  

(১০)  টুনটুনির ছানারা উড়তে শিখতে টুনটুনি খুশি হল কেন ? 

উত্তরঃ ছানারা উড়তে শিখে গেলে দুষ্টু বিড়াল আর ছানাদের খেতে পারবে না , তাই ছানারা উড়তে শিখলে টুনটুনি খুশি হল।

(১১) বেগুনগাছে কে বাসা করেছিল ? 

উত্তরঃ বেগুনগাছে  টুনটুনি পাখি বাসা করেছিল।  

(১২) বাসার ভিতরে কয়টি ছোট্ট ছানা ছিল ? 

উত্তরঃ বাসার ভিতরে তিনটি ছোট্ট ছিল।  

(১৩) " কি করছিস লা টুনটুনি ?" ...... কে বলেছিল ? 

উত্তরঃ গৃহস্থের বিড়াল টুনটুনিকে বলেছিল।  

(১৪) " প্রণাম হই , মহারানী " ....... মহারানী কে ? 

উত্তরঃ মহারানী হল গৃহস্থের বিড়াল।  

(১৫) " দূর হ লক্ষ্মীছাড়ী বিড়ালনী " ---- একথা কে  কাকে বলেছে ? 

উত্তরঃ   একথা টুনটুনি গৃহস্থের  দুষ্টু বিড়ালকে বলেছে।  

(১৬) বেগুন কাঁটায় নাকাল হয়ে কে ঘরে ফিরেছিল ? 

উত্তরঃ গৃহস্থের দুষ্টু বিড়ালটা বেগুন কাঁটায় নাকাল হয়ে  ঘরে ফিরেছিল।  















Thursday, 22 April 2021

বিদূষক

 বিদূষক 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'বিদূষক ' গল্পটি লেখকের 'লিপিকা' গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।  

        গল্পে  কাঞ্চীর রাজা একজন নির্মম ও নৃশংস রাজা।  তিনি কর্ণাট জয় করে চন্দন , হাতির দাঁত , সোনা মানিক লুঠ করে হাতি বোঝাই করে দেশে ফিরে চলেছেন। তিনি এতটাই নির্মম যে যুদ্ধের হত্যাতেই থেমে থাকেন নি যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে বলেশ্বরীর মন্দির বলির রক্তে ভাসিয়ে পুজো দিলেন।  তাঁর রক্তবস্ত্র , রক্তচন্দনের তিলক আর জবার মালা উগ্র সেই নির্মমতারই বর্ণ - সংকেত।  পুতুল সাজিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় রত কর্ণাটের ছেলের দল যখন 'বুক ফুলিয়ে ' কাঞ্চী রাজকে বলল যে , তাদের এই খেলায় কর্ণাটের জিত আর কাঞ্চীর হার তখন কাঞ্চীরাজের ' চক্ষু রক্তবর্ণ ' হয়ে উঠল।  ছেলেদের গাছের সঙ্গে বেঁধে বেত্রাঘাতের আদেশ দেওয়া হল।  অবোধ ছেলেদের জন্য গ্রাম থেকে ছুটে আসা মা-বাপের মার্জনাভিক্ষায় রাজার ক্রোধ যেন আরো জ্বলে উঠল।  'কাঞ্চীর রাজাকে কোনোদিন যেন ভুলতে না পারে ' - গ্রামকে এমন শিক্ষাদানের জন্য সেনাপতিকে হুকুম করে রাজা শিবিরে চলে গেলেন।  সেনাপতি সন্ধেবেলায় এসে জানাল ,'শৃগাল  কুকুর ছাড়া  এ গ্রামে কারো মুখে শব্দ শুনতে ' পাওয়া যাবে না।  হত্যাকাণ্ডের ইঙ্গিতটি এখানে অস্পষ্ট রয়ে গেছে।  গ্রামের এই উচিত শিক্ষায় স্বস্তি লাভ করে মন্ত্রী বললেন " মহারাজের মান রক্ষা হল " , আর পুরোহিত রাজার প্রশস্তি করে বললেন , 'বিশ্বেশ্বরীর মহারাজের সহায়। "  

                    গল্পে বিদূষক একবার মাত্র হেসেছে।  সেই হাসিই যেন তার প্রতিবাদ।  গল্পের শেষে বিদূষক নির্মম কাঞ্চীর রাজার সভা থেকে বিদায় নিলেন।  

"বিদূষক"গল্পের মূল কথা :

'বিদূষক' অর্থাৎ রাজার রসিক সহচর যার কাজ রাজাকে হাসানো।  কাঞ্চীর রাজা সর্বদা বিদূষক নিয়ে চলেন।  কিন্তু সম্পূর্ণ গল্পে রাজাকে একটি বারের জন্যও হাসতে দেখা যায় না।  বরং কর্ণাটজয়ী  কাঞ্চীর রাজা অত্যন্ত নির্মম। বলেশ্বরীর মন্দির বলির রক্তে ভাসিয়ে পুজো দেওয়া , তাঁর রক্তবস্ত্র , রক্তচন্দনের তিলক , জবার মালা সবকিছুই তাঁর নির্মমতারই প্রতীক।  এমনকি ছোটশিশুদের খেলাকেও তিনি সহজভাবে  না নিয়ে ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে উঠে সম্পূর্ণ গ্রামকে কঠিন শাস্তি দেন।  শক্তির অহংকারে উন্মত্ত কাঞ্চীররাজার বিরুদ্ধে কেউই মাথা তুলে দাঁড়ায় না। একমাত্র ব্যতিক্রম বিদূষক।  বজ্রপাত শুধুমাত্র একটি জায়গাকে ধ্বংস করতে পারে কিন্তু রাজরোষ সমগ্র রাজ্যকেই ধ্বংস করে দিতে পারে।  বিদূষক বুঝতে পেরেছিল শক্তির গর্বে উন্মত্ত এই কাঞ্চীর রাজ্যে কোন আনন্দ , শান্তি কিছুই থাকবে না।  তাই সে কাঞ্চীর রাজার সভা ত্যাগ করে চলে যায়।  বিদূষক এই গল্পে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নিঃশব্দ প্রতীক। 

প্রশ্ন ও উত্তর 

(১)  ' পুজো দিয়ে চলে আসছেন ' 

(ক)  কে কখন কোথায় পুজো দিয়ে ফিরছিলেন ? 

(খ) ফেরার পথে তিনি কী দেখলেন ? 

উত্তর : 

(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা " বিদূষক " গল্পে কাঞ্চীর রাজা কর্ণাট জয় করার পরে বলেশ্বরী মন্দির থেকে পুজো দিয়ে ফিরছিলেন।  

(খ) ফেরার পথে রাজা দেখলেন যে রাস্তার  ধারে আমবাগানে একদল ছেলে পুতুল সাজিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলছে।  

(২) " এ গ্রামে  কারো মুখে শব্দ শুনতে পাবেন না " 

(ক) কে কাকে কথাটি বলেছেন ? 

(খ) কোন প্রসঙ্গে কথাটি বলা হয়েছে ? 

(গ) কথাটি শুনে মন্ত্রী , পুরোহিত ও বিদূষক কী বলেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

(ক) কাঞ্চীর সেনাপতি কাঞ্চীর রাজাকে কথাটি বলেছেন।  

(খ) কাঞ্চীর রাজা সেনাপতিকে বলেছিলেন যে গ্রামের ছেলেদের গাছে বেঁধে বেত মারতে এবং সেই গ্রামকে এমন শাস্তি দিতে যে এই গ্রাম কখন যেন কাঞ্চীর রাজাকে ভুলতে না পারে।  এই প্রসঙ্গে কথাটি বলা হয়েছে।  

(গ) মন্ত্রী বলেছিলেন 'মহারাজের মান  রক্ষা হল ' , পুরোহিত বলেছিলেন ' বিশ্বেশ্বরীর মহারাজের সহায়' এবং বিদূষক বলেছিলেন তাঁকে বিদায় দিতে।  

(৩) " ওরা অবোধ , ওরা  খেলা করছিল " 

(ক) " ওরা " বলতে এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে ? 

(খ) ওরা কী করছিল ? 

(গ) রাজা ওদের জন্য কী হুকুম দিয়েছিলেন ? কেন ? 

উত্তরঃ 

(ক) " বিদূষক " গল্পে কাঞ্চীর রাজা যখন মন্দির থেকে পুজো দিয়ে ফিরে আসছিলেন তখন তিনি একদল ছেলেকে পথের ধারে আমবাগানে খেলতে  দেখেছিলেন।  এখানে 'ওরা' বলতে ওই ছেলের দলের কথা বলা হয়েছে।  

(খ) ওরা দুই সারি পুতুল নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলছিল। 

(গ) রাজা ওদের জন্য সেনাপতিকে হুকুম দিয়েছিলেন যে সব কটা ছেলেকে গাছের 

সাথে বেঁধে বেত মারতে।  

                   কর্ণাটের সঙ্গে কাঞ্চীর যুদ্ধে কাঞ্চীর রাজার জয় হয়েছিল, কিন্তু ছেলেরা গর্বের সঙ্গে বলেছিল কর্ণাটের জিত আর কাঞ্চীর হার।  তাই ক্রোধে উন্মত্ত কাঞ্চীর রাজা ওদের  শাস্তি  দিতে চেয়েছিলেন।  


(৪) " মহারাজের সভায় থাকলে আমি হাসতে ভুলে যাব " 

(ক)  বক্তা কে ? 

(খ) তিনি কোন মহারাজের সভায় ছিলেন ?

(গ) কেন তিনি হাসি ভুলে যাবার কথা বলেছিলেন ? 

উত্তরঃ 

(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত  " বিদূষক "  গল্পে  এখানে বক্তা হল বিদূষক। 

(খ) তিনি কাঞ্চীর রাজার সভায় ছিলেন।  তাঁর কাজ ছিল লোককে হাসানো  এবং আনন্দিত রাখা আর নিজেকেও আনন্দিত রাখা। 

(গ) কাঞ্চীর রাজা সেনাপতিকে হুকুম দিয়েছিলেন যে ছেলেদের গাছের সঙ্গে বেঁধে বেত মারতে এবং গ্রামটিকে এমন শিক্ষা দিতে যে তারা যেন কাঞ্চীর রাজাকে কোনদিন ভুলতে না পারে।  বিদূষকের কাজ হল লোকেদের হাসানো আর আনন্দে রাখা।  যদি তিনি এমন নির্মম রাজায় সভায় থাকেন যে খুব অহংকারী এবং অত্যাচারী তাহলে তিনি নিজে হাসতে ভুলে যাবেন আর রাজার মতন অত্যাচারী হয়ে যাবেন।  

(৫) " বিদূষক হা-হা করে হেসে উঠল " 

(ক) অংশটি কার লেখা , কোন রচনা থেকে গৃহীত ? 

(খ) বিদূষক হেসে উঠেছিল কেন ? 

(গ) তখন রাজা কী হুকুম দিলেন ? 

উত্তরঃ 

(ক) অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা " বিদূষক " রচনা থেকে গৃহীত।  

(খ) কাঞ্চীর রাজা অস্ত্রবলে ও সৈন্যবলে  কর্ণাটের রাজার থেকে শক্তিশালী হতে পারেন , কাঞ্চীর রাজা যুদ্ধে কর্ণাটের রাজাকে পরাজিত করে কর্ণাট জয় করতে পারেন , কিন্তু তাতে মানুষের মন জয় করতে পারেন না।  অবোধ শিশুরাও   নিজেদের  রাজার জয় চায়।  তাই তারা কর্ণাটের সঙ্গে কাঞ্চীর 'যুদ্ধ যুদ্ধ ' খেলার ফল হিসেবে 'কর্ণাটের জয় , কাঞ্চীর হার ' বলে।  অবোধ শিশুদের মনে ভয় থাকে না , তাই তারা মনের কথা সত্যি করে বলতে পেরেছে।  মদমত্ত রাজা ,শিশুদের সহজ জবাবে হেসে খেলাটি উপভোগ করতে পারতেন।  কিন্তু তিনি ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে উঠলেন।   সহজ-সুন্দর হাসির উপাসক বিদূষক  ছেলেদের এই খেলা ও কথা শুনে হেসে উঠল।  

(গ) কাঞ্চীর রাজা সেনাপতিকে হুকুম দিয়েছিলেন যে ছেলেদের গাছের সঙ্গে বেঁধে বেত মারতে এবং গ্রামটিকে এমন শিক্ষা দিতে যে তারা যেন কাঞ্চীর রাজাকে কোনদিন ভুলতে না পারে।

(৬) " দেখে আসি ওরা কি খেলছে। " 

(ক) উক্তিটি কার ? 

(খ) 'ওরা " বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ? 

(গ) তারা কোথায় কী খেলছিল ? 

উত্তরঃ 

(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'বিদূষক ' গল্পে উক্তিটি কাঞ্চীর রাজার।  

(খ) 'ওরা ' বলতে আমবাগানে  যে ছেলেগুলি খেলছিল তাদের কথা বলা হয়েছে।  

(গ) ছেলেরা আমবাগানে দুই সারি পুতুল সাজিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলছিল।  












Friday, 16 April 2021

রাজ্যলাভের উৎসবে

 রাজ্যলাভের উৎসবে 

কৃত্তিবাস ওঝা  

রথ রথী ঘোড়া সাজে ,                  নানা রঙ্গে বাদ্য বাজে 

মুনি সব করে জয়ধ্বনি। 

জয় জয় হুলাহুলি ,                         করে সবে কোলাকুলি 

সর্বলোকে কি দুঃখী কি ধনী।

শিশুনারী  জয়ান্বিত ,                        পুষ্পগন্ধে সুশোভিত ,

আমোদ প্রমোদ সব ঘরে।  

স্বর্গপুরী তুল্য বেশ ,                               অযোধ্যায় সর্বদেশ

 নাচে গায় হরিষ অন্তরে। 

সবে ভাবে রঘুপতি                                   হইলেন মহীপতি 

ঘুচিল সবার আজি ক্লেশ।  

না হইবে দুঃখ শোক                          আনন্দিত সর্বলোক 

নিস্তার পাইল সর্বদেশ। 


প্রশ্ন ও উত্তর  

(১)  " রাজ্যলাভের উৎসবে " কবিতাটি কে লিখেছেন ও কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ? 

উত্তরঃ     " রাজ্যলাভের উৎসবে " কবিতাটি কবি কৃত্তিবাস ওঝার লিখেছেন ও " শ্রীরাম পাঁচালী " কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। 

(২)  মুনিরা কী করছিলেন ? 

উত্তরঃ  মুনিরা সব জয়ধ্বনি করছিলেন।  

(৩) শিশু ও নারী কোন গন্ধে সুশোভিত হয়েছিল ? 

উত্তরঃ    শিশু ও নারী পুষ্পগন্ধে সুশোভিত হয়েছিল।  

(৪) আমোদ প্রমোদ কোথায় হচ্ছিল ? 

উত্তরঃ   অযোধ্যার সব ঘরে ঘরে আমোদ প্রমোদ হচ্ছিল।  

(৫) সবাই কী ভাবছিল ? 

উত্তরঃ   শ্রীরামচন্দ্র রাজা হওয়ায় সবাই ভাবছিল এইবার তাদের দুঃখ শোক সব দূর হয়ে যাবে।  

(৬) 'রথী ' শব্দের অর্থ কী ? 

উত্তরঃ   রথী শব্দের অর্থ 'যোদ্ধা'। 

(৭) 'রঘুপতি ' বলতে কাকে বোঝান হয়েছে ?

 উত্তরঃ  রঘুপতি বলতে শ্রীরামচন্দ্রকে বোঝানো হয়েছে। 

(৮) শ্রী রামচন্দ্র কোথাকার রাজা হয়েছেন ? 

উত্তরঃ শ্রী রামচন্দ্র অযোধ্যার  রাজা হয়েছেন। 

(৯) " মহীপতি " শব্দের অর্থ কী ? 

উত্তরঃ " মহীপতি " শব্দের অর্থ রাজা।  

(১০) কাদের ক্লেশ দূর হবে ?

উত্তরঃ  অযোধ্যাবাসীর ক্লেশ দূর হবে।  

(১১) অযোধ্যার সব ঘরে ঘরে কী হচ্ছিল ? 

উত্তরঃ অযোধ্যার সব ঘরে ঘরে আমোদ প্রমোদ  হচ্ছিল। 

(১২) " সর্বলোকে কি দুঃখী কি ধনী " 

(ক) প্রশ্নে উল্লিখিত অংশটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে ? কার লেখা ? 

(খ) 'সর্বলোকে' কী করছে ? 

(গ) কেন করছে ? 

উত্তরঃ 

(ক) প্রশ্নে উল্লিখিত অংশটি 'রাজ্যলাভের উৎসবে' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। 

                            কৃত্তিবাস ওঝার লেখা।  

(খ) 'সর্বলোক ' অর্থাৎ অযোধ্যাবাসী আনন্দে কোলাহল করছে  ও পরস্পরের সাথে কোলাকুলি করছে।  

(গ) শ্রী রামচন্দ্র রাজা হওয়ায় সবাই ভাবছে এবার তাদের সব দুঃখ - কষ্ট  ঘুচে যাবে।  তাই তারা আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে কোলাকুলি করছে। 

(১৩) " না হইবে দুঃখ শোক        আনন্দিত সর্বলোক 

                                 নিস্তার পাইল সর্বদেশ

(ক) কেন কোন দুঃখ শোক থাকবে না ? 

(খ) 'নিস্তার' শব্দের অর্থ কী ? 

(গ) সর্বদেশ কীভাবে নিস্তার পেল ? 

উত্তরঃ  

(ক) শ্রীরামচন্দ্র রাজা হওয়ায় কোন দুঃখ শোক থাকবে না।  

(খ) 'নিস্তার' শব্দের অর্থ মুক্ত। 

(গ) শ্ৰীরামচন্দ্রকে রাজা দশরথ   রাজা করার কথা ঘোষণা করবার পর প্রজাদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।  সমগ্র রাজ্যবাসী মনে করে দুঃখ থেকে   নিস্তার পেল।  

(১৪) " সবে ভাবে রঘুপতি                     হইলেন মহীপতি 

                            ঘুচিল সবার ক্লেশ "  

(ক) পংক্তিটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে ? 

(খ) কার লেখা ? 

(গ) কে মহীপতি হয়েছেন ? 

(ঘ) সবার ক্লেশ ঘুচে যাবে কেন ? 

উত্তরঃ 

(ক) পংক্তিটি ' রাজ্যলাভের উৎসবে' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। 

(খ) কৃত্তিবাস ওঝার লেখা।  

(গ) শ্রী রামচন্দ্র মহীপতি হয়েছেন। 

(ঘ) অযোধ্যার রাজা দশরথ তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র রামচন্দ্রকে রাজা করার কথা ঘোষণা করবার পর প্রজাদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।  শিশু -নারী , দরিদ্র - ধনী নির্বিশেষে সবাই আনন্দে মাতোয়ারা  হয়ে ওঠে।  সবাই মনে করে এবার তাদের ক্লেশ ঘুচে যাবে।  











Thursday, 15 April 2021

মামা ভাগ্নের গল্প 

উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী 

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন : 

(১) শিয়াল কার ভয়ে তার পুরোনো গর্তে যায় না ? 

উত্তরঃ  শিয়াল নরহরি দাসের ভয়ে তার পুরোনো গর্তে যায় না।  

(২) শিয়ালের নতুন গর্তের কাছে কী ছিল ? 

উত্তরঃ শিয়ালের নতুন গর্তের কাছে একটি কুয়ো ছিল।  

(৩) শিয়াল কুয়োর মুখে কী বিছিয়ে ছিল ? 

উত্তরঃ শিয়াল কুয়োর মুখর একটি মাদুর বিছিয়েছিল।  

(৪) জলখাবারের কথা শুনে কে খুশি হয়েছিল ? 

উত্তরঃ জলখাবারের কথা শুনে বাঘমামা খুশি হয়েছিল।  

(৫) " আধমরা " বলতে কী বোঝ ? 

উত্তরঃ " আধমরা " বলতে বোঝায় অর্ধমৃত অর্থাৎ খুবই খারাপ অবস্থা।  

(৬) কে থতোমতো খেয়েছিল ? 

উত্তরঃ বাঘমামা শিয়ালের কথা শুনে থতোমতো খেয়েছিল।  

(৭) কুমিরটা কত হাত লম্বা ছিল ? 

উত্তরঃ কুমিরটা বিশ হাত লম্বা ছিল।  

(৮) কুমির কাকে ধরে জলে নামিয়েছিল ? 

উত্তরঃ কুমির বাঘমামাকে ধরে জলে নামিয়েছিল।  

(৯) শিয়াল মাদুর দিয়ে কী করেছিল ? 

উত্তরঃ শিয়াল মাদুরটাকে কুয়োর মুখে বিছিয়ে দিয়েছিল।  

(১০) কে কুয়োতে পড়ে গিয়েছিল ? 

উত্তরঃ বাঘমামা কুয়োতে পড়ে গিয়েছিল।   

(১১) বাঘ কেন ভারি খুশি হয়ে উঠেছিল ?

উত্তরঃ বাঘ জলখাবারের কথা শুনে ভারি খুশি হয়ে উঠেছিল। 


পোস্টমাস্টার

প্রশ্ন ও উত্তর    (১) ' পোস্টমাস্টার' গল্পটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ?  উত্তরঃ  ' পোস্টমাস্টার' গল্পটি 'হিতবাদী' পত...