তিন পাহাড়ের কোলে
শক্তি চট্টোপাধ্যায়
মূল বিষয় সংক্ষেপ :
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ' তিন পাহাড়ের কোলে ' কবিতায় এমন একটি জগতের বর্ণনা দিয়েছেন যা
প্রতিটি শহরবাসীর স্বপ্ন। শহরের কর্মব্যস্ত জীবন ছেড়ে প্রতিটি মানুষ চায় " তিন পাহাড়ের কোলে "র
মতো এক শান্ত সবুজ প্রাকৃতিক পরিবেশে কাটিয়ে আসতে। কবি ও তার দুই বন্ধু একদিন রাত্রিতে তিন
পাহাড়ের কোলে নেমে তাদের কী অভিজ্ঞতা হল তারই বর্ণনা রয়েছে এই কবিতায়।
বিশুদ্ধ , টাটকা বাতাস সেবনের নিমিত্তে তিনজন শহরবাসী পাহাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
পাহাড়ে পৌঁছে সেখানকার নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে তাদের চোখ সরতে চায় না। ফ্রেমে আঁটা
ফোটোর মতো সেই আলো -আঁধারি দৃশ্য দেখে মন জুড়িয়ে যায়। স্টেশনে কোনো মানুষের দেখা নেই।
মাথার উপরে খোলা আকাশ, তারায় তারায় ভরা প্রভৃতি যেন উজাড় করে দিয়েছে তার সৌন্দর্য। এরকম
একটি জায়গা আসলে , সুদূর অতীত ভুলে গিয়ে সবাই পথ হারিয়ে ফেলবে। ঝরনা , টিলা , পাথুরে
বনভূমির মধ্যে শহুরে সড়ক নেই , কিন্তু যা আছে তা কিছু কম নয়। পাহাড়ি উঁচু নীচু পথ , গাড়ি-
ঘোড়ার উৎপাত নেই , নির্জন , নিরালা পথে পথিক আপন মনে হেঁটে চলে। মনের ভূমিতে পাহাড়ি
বনভূমির সৌন্দর্য রেখাপাত করে, মন আরো চায় বনভূমির ওপারের না দেখা নিসর্গ কত অসাধারণ ,
যেমন মনে হয় স্বপ্নে তারা এসে কথা বলে যায় , হাতছানি দিয়ে ডাকে। ধীরে ধীরে পাহাড়ের মাথায়
রক্তিম সূর্য প্রকৃতিকে আবির রঙে রাঙিয়ে দেয়। সবুজে ঘেরা গ্রাম দেখা যায় তিন পাহাড়ের গায়ে। শক্ত
পোক্ত মানুষগুলো দৈনিক কর্মে প্রবৃত্ত হয়। এরকম সহজ , সরল জীবন শুধুমাত্র পাহাড়ি কোন গ্রামেই
অতিবাহিত করা সম্ভব। শহুরে পায়রার খোপে শুধু বিষাক্ত বাতাস , সেখানে থাকা কী সম্ভব ? তিনটি
পাহাড় দিয়ে যেন সবুজ কাঁথায় নকশা আঁকা হয়েছে। সেই সবুজের উপর অবোধ শিশুরা নিশ্চিন্তে
খেলা করে। খোলা -মেলা বিশুদ্ধ বাতাসে তাদের ছোটা বা চিৎকার করার সীমা পরিসীমা নেই।
No comments:
Post a Comment