(১) " তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল "
---- চোখ মার্বেল হয়ে যাওয়া বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তরঃ
চোখ 'মার্বেল' হওয়ার অর্থ 'অবাক হওয়ার জন্য চোখ গোল হয়ে বিস্ফারিত হওয়া '।
" জ্ঞানচক্ষু " গল্পের তপন করত লেখক , কবি , সাহিত্যিকরা সাধারণ মানুষ নন। কিন্তু যখন শুনল মেসোমশাই একজন লেখক এবং তাঁর অনেক লেখা ছাপাও হয়েছে , তখন যেন সে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিল না। লেখকদের সম্পর্কে তার যে-ধারণা ছিল, তা মিথ্যে হওয়ায় এবং এত কাছ থেকে একজন সাহিত্যিককে দেখতে পাওয়ার রোমাঞ্চে তার চোখ 'মার্বেল' হয়ে গেল।
(২) " এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের "
--- তপনের কোন বিষয়ে কেন সন্দেহ ছিল ?
উত্তরঃ
আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পের তপন লেখকদের এক অন্য জগতের বাসিন্দা বলে মনে করত। তাঁরাও যে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতোই রোজকার জীবনযাপন করেন , তা ছিল তপনের কল্পনার বাইরে। সে আগে কোনদিন কোনো লেখকে কাছ থেকে দেখেনি। এমনকি লেখকদের যে দেখা পাওয়া যায় এ কথাও তার জানা ছিল না। তাই লেখকরা যে তার বাবা , কাকা, মামাদের মতোই সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে তার সন্দেহ ছিল।
(৩) " একেবারে নিছক মানুষ "
(ক) কাকে 'নিছক মানুষ ' বলা হয়েছে ?
(খ) 'একেবারে নিছক মানুষ ' বলার কারণ কী ?
উত্তরঃ
(ক) আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্প থেকে নেওয়া এই অংশে তপনের লেখক ছোটমেসোকে 'নিছক মানুষ ' বলা হয়েছে।
(খ) লেখক মেসোকে দেখার আগে পর্যন্ত তপনের ধারণা ছিল , লেখকরা নিশ্চয় ইহজগতের মানুষ নন -- হয়তো তাঁরা আকাশ থেকে পড়া জীব। কিন্তু নতুন ছোটমেসো তার বাবা , ছোটমামা কিংবা মেজকাকুর মতোই মানুষ এবং তিনিও সাধারণ মানুষের মতোই দাড়ি কামান , সিগারেট খান , চানের সময় চান করেন , ঘুমোনোর সময় ঘুমোন , খবরের কাগজ পড়ে তর্ক জুড়ে দেন, সিনেমা দেখেন , বেড়াতে বের হন অর্থাৎ তিনি একেবারে সাধারণ আটপৌরে মানুষের মতো জীবন ধারণ করেন দেখে বিস্মিত তপন তাঁকে 'নিছক মানুষ ' বলেছে।
(৪) " নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের "
(ক) 'জ্ঞানচক্ষু ' বলতে কী বোঝায় ?
(খ) তা কীভাবে তপনের খুলে গিয়েছিল ?
উত্তরঃ
(ক) আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পে ' জ্ঞানচক্ষু' বলতে মানুষের অন্তর্দৃষ্টিকে বোঝানো হয়েছে , যার সাহায্যে মানুষ সত্যকে যাচাই করে নিতে পারে।
(খ) একজন লেখক সম্পর্কে তপনের মনে যে ধারণা ছিল তা নতুন মেসোর সংস্পর্শে এসে ভেঙে যায়। লেখকরা যে তার বাবা , মামা ও কাকাদের সাধারণ জীবনযাপন করে সেটা সে প্রত্যক্ষ করে। তাদের মতোই দাড়ি কামান , সিগারেট খান , খেতে বসে খাবার তুলে দেন , পলিটিক্যাল তর্কও করেন - এসব দেখেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়। সে ভাবে লেখকরা আকাশ থেকে পড়া কোন জীব নয়, নিছক মানুষ।
(৫) "রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই "
--- কথাটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ
মূল্যবান রত্ন বিশেষজ্ঞকে 'জহুরি ' বলা হয়। আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পে 'জহুরি ' বলতে নতুন মেসোকে বোঝানো হয়েছে। লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটা আস্ত গল্প লিখে ছোটমাসিকে দেখায়। ছোটমাসি তা নিয়ে সারাবাড়িতে শোরগোল বাধিয়ে নতুন মেসোকে দেখাতে যায়। তপন মুখে আপত্তি জানালেও মনে মনে পুলকিত হয় এই ভেবে যে তার লেখার মূল্য একমাত্র যদি কেউ বোঝে তবে ছোটমেসোই বুঝবে। জহুরির রত্ন চেনার মতো একজন লেখকই পারে কোনো লেখার মূল্যায়ণ করতে।
(৬) " তোমার গল্প আমি ছাপিয়ে দেব "
(ক) বক্তা কে ?
(খ) উল্লিখিত উক্তিটির মধ্য দিয়ে বক্তার কোন মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ
(ক) আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পে উল্লিখিত উক্তিটির বক্তা তপনের ছোটমেসো।
(খ) তপনের লেখা পড়ে তার লেখক ছোটমেসো তাকে উৎসাহ দেন। তিনি এ কথাও বলেন যে , লেখাটা একটু'কারেকশান ' করে দিলে ছাপানোও যায়। তাঁর সঙ্গে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার সম্পাদকের জানাশোনা আছে। মেসো অনুরোধ করলে তিনি তা না করতে পারবেন না। আপাতদৃষ্টিতে এটি তাঁর উদারতার পরিচয় বলেই মনে হয়। কিন্তু একটু গভীরে বিচার করলে বোঝা যায় , শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাছে নিজের প্রভাব জাহির করার জন্যি তিনি এ কাজ করেছিলেন।
(৭) " বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা "
--- কোন কথাটা উঠেছিল ?
উত্তরঃ
আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পে তপন লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লেখে তার স্কুলে ভর্তি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে। তা ছোটমাসির হাতে পড়ে এবং মাসি তা নিয়ে বেশ হইচই করে তার লেখক-স্বামীকে গল্পটি দেখায়। তাঁর স্বামী গল্প দেখে তপনকে ডেকে তার গল্পের প্রশংসা করেন এবং সামান্য কারেকশান করে দিলে তা ছাপার যোগ্য এ কথাও বলেন। মাসির অনুরোধে মেসো তপনকে কথা দেন 'সন্ধ্যাতারা 'য় তার গল্প ছাপিয়ে দেবেন। এ কথাটাই চায়ের টেবিলে উঠেছিল।
(৮) "তপনের হাত আছে। চোখও আছে। "
---- এখানে 'হাত' ও 'চোখ' আছে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তরঃ
আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পে তপনের লেখা গল্প শুনে বাড়ির সবাই হাসাহাসি করলেও নতুন মেসো তার প্রতিবাদ করে আলোচ্য উক্তিটি করেন।
এখানে 'হাত' আছে বলতে বোঝানো হয়েছে যে , তপনের লেখার ক্ষমতা আছে , বা ভাষার দখল আছে। আর 'চোখ' আছে কথার অর্থ হল তপন তার চারপাশের দুনিয়াটা ভালো করে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে দেখতে ও উপলব্ধি করতে পারে। তার গল্প লেখার বিষয় নির্বাচন থেকেই এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায়।
(৯) " বিষণ্ণ মন নিয়ে বসে আছে "
--- কে কেন 'বিষণ্ণ' মন নিয়ে বসে আছে ?
উত্তরঃ
আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পে লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন তার ভরতির দিনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে একটি গল্প লিখে ফেলে। মাসির মারফত সেই গল্পটি লেখক-মেসোর হাতে যায়। তার লেখার জন্য সে প্রশংসাও পায়। এমনকি তিনি জানান একটু 'কারেকশান' করে তা ছাপানোর ব্যবস্থাও করবেন। এদিকে এই সংবাদ বাড়ির সবাই জেনে যায়। ফলে দিনরাত তপনকে ঠাট্টা শুনতে হয়। বেশ কিছুদিন চলে যায় , তপন আরও দু-তিনটে গল্প লিখে ফেলে। কিন্তু মেসোর নিয়ে যাওয়া গল্পটি আর ছাপা হয়ে আসে না। এই কারণেই তপন বিষণ্ণ হয়ে বসে থাকে।
(১০) " বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের। "
-- প্রসঙ্গ উল্লেখ সহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ
প্রশ্নে উল্লিখিত অংশটি আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
'বুকের রক্ত ছলকে ওঠা ' কথাটির অর্থ হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে পড়া। তপনের লেখা 'প্রথম দিন' গল্পটি পড়ে মুগ্ধ ছোটমেসো জানিয়েছিলেন যে , তিনি তা বিখ্যাত 'সন্ধ্যাতারা ' পত্রিকায় ছাপানোর ব্যবস্থা করে দেবেন। তারপর থেকে প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে তপন অপেক্ষা করে থাকত -- কবে তার লেখাটি পত্রিকায় প্রকাশিত হবে। তপন মন খারাপ করে বসে ছিল। এমন সময় একদিন তার মাসি আর মেসোকে পত্রিকা হাতে তাদের বাড়িতে আসতে দেখে তপন আনন্দে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তপনের মনে হয় নিশ্চয় তার গল্পটি প্রকাশিত হয়েছে বলে নতুন মেসো তাদের বাড়িতে এসেছেন। আশা ও ঔৎসুক্য তপনের মনে জেগে ওঠার কারণেই তার 'বুকের রক্ত ছলকে ' উঠেছিল।
(১১) " পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ? "
(ক) 'অলৌকিক ' কথার অর্থ কী ?
(খ) কোন প্রসঙ্গে কার মনে এই প্রশ্নটি এসেছে ?
(গ) ঘটনাটিকে 'অলৌকিক' বলা হয়েছে কেন ?
উত্তরঃ
(ক) " অলৌকিক' কথার অর্থ হল অবাস্তব বা অসম্ভব ব্যাপার।
(খ) আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পে তপন তার লেখক ছোটমেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটা গল্প লেখে। তপনের লেখা গল্প তার লেখক মেসো ছাপিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে যান। এমনই একদিন নিতান্ত আশাহত তপন যখন ক্ষুণ্ণ মনে বসে আছে , তখনই তার মাসি ও মেসো 'সন্ধ্যাতারা ' পত্রিকার একটি সংখ্যা নিয়ে তাদের বাড়ি আসেন। মুহূর্তেই তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে এই ভেবে যে সত্যি কি তার গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে, তার লেখা হাজার হাজার পাঠকের হাতে হাতে ঘুরছে। কল্পনার দৃষ্টিতে এমনভাব জেগে ওঠায় তপনের মনে উল্লিখিত প্রশ্নটি আসে।
(গ) লেখক মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটা গল্প লিখে ফেললেও সে ভাবতে পারেনি তার গল্প কোন পত্রিকায় ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হবে। তার গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হবে এবং সেটি হাজার হাজার পাঠক পড়বে সেটা তপনের মতো ছোট ছেলের কাছে স্বপ্নের মতোই কাল্পনিক। তাই এই গল্প চেপে বেড়োনোর ঘটনাটি তপনের কাছে 'অলৌকিক ঘটনা ' মনে হয়েছে।
(১২) " গল্প ছাপা হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হওয়ার কথা , সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না "
---- কার গল্প ? গল্প ছাপা হওয়ার পরেও বক্তার মনে আনন্দ নেই কেন ?
উত্তরঃ
আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পে তপনের লেখা ' প্রথম দিন' গল্পের কথা এখানে বলা হয়েছে।
লেখক মেসোর প্রভাব ও পরিচিতির জোরে ছোট্ট তপনের লেখা গল্পটি 'সন্ধ্যাতারা ' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তপনের লেখা গল্প ছাপা হওয়ার সংবাদে সারাবাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। কিন্তু তপনের কৃতিত্বের বদলে মেসোর মহত্ত্বকেই বাড়ির বড়োরা বেশি গুরুত্ব দেয়। তাদের মতে মেসোই ও গল্প ছাপিয়ে দিয়েছেন। মেজোকাকু বলেন , এমন মেসো থাকলে তারাও একবার চেষ্টা করে দেখতেন। এসব নানা কথায় তপন ক্রমশ যেন হারিয়ে যায়। তাই মনটা একটু তিক্ত হয়ে যাওয়ায় ; গল্প ছাপা হওয়ায় ভয়ংকর আহ্লাদটা সে আর খুঁজে পায় না।
(১৩) " তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন "
(ক) 'আজ ' বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে ?
(খ) তপনের এমন মনে হওয়ার কারণ কী ?
উত্তরঃ
(ক) আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্পে 'আজ' বলতে সেই দিনটির কথা বলা হয়েছে , যেদিন তপনের মাসি ও মেসো 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন , যাতে তপনের প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়েছিল।
(খ) নিজের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে হাতে পাওয়ার জন্য তপন বেশ কিছুদিন অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে প্রতীক্ষা করেছিল। হঠাৎ তার ছোটো মাসি ও মেসো 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা নিয়ে আসে যেখানে তপনের লেখা প্রথম গল্প 'প্রথম দিন ' ছাপা হয়েছিল। একসময় মায়ের অনুরোধে নিজের মুখে গল্পটি পড়ে শোনাতে গিয়ে উপলব্ধি করে এই ছাপানো গল্পের কোনো লাইন তার লেখা নয়। প্রত্যেকটি লাইন নতুন , আনকোরা , গল্পটি তার নতুন লেখক মেসো তার পাকা হাতের কলমে সম্পূর্ণ নতুন করে লিখেছেন। এর ফলে তপন চরম অপমানিত বোধ করে। সবাই বাহবা দিলেও আরও একবার জোরালোভাবে শোনা যায় তপনের লেখক মেসো তপনের গল্পটি ছাপিয়ে দিয়েছে। তপনের লেখার থেকেও মেসোর 'কারেকশান ' ও ছাপিয়ে দেওয়াই বেশি গুরুত্ব পেতে থাকে। এতে তপনের লেখকসত্তা আহত হয়েছিল বলেই বিশেষ দিনটিকে সে সবচেয়ে দুঃখের দিন বলে মনে করে।
(১৪) " শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন "
(ক) কার , কোন দুঃখের কথা বলা হয়েছে ?
(খ) এরপর সে কী ধরণের সংকল্প গ্রহণ করেছিল ?
উত্তরঃ
(ক) আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু ' গল্প থেকে উল্লিখিত উক্তিটি নেওয়া হয়েছে। নিজের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে হাতে পাওয়ার জন্য তপন বেশ কিছুদিন অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে প্রতীক্ষা করেছিল। হঠাৎ তার ছোটো মাসি ও মেসো 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা নিয়ে আসে যেখানে তপনের লেখা প্রথম গল্প 'প্রথম দিন ' ছাপা হয়েছিল। একসময় মায়ের অনুরোধে নিজের মুখে গল্পটি পড়ে শোনাতে গিয়ে উপলব্ধি করে এই ছাপানো গল্পের কোনো লাইন তার লেখা নয়। প্রত্যেকটি লাইন নতুন , আনকোরা , গল্পটি তার নতুন লেখক মেসো তার পাকা হাতের কলমে সম্পূর্ণ নতুন করে লিখেছেন। এর ফলে তপন চরম অপমানিত বোধ করে। সবাই বাহবা দিলেও আরও একবার জোরালোভাবে শোনা যায় তপনের লেখক মেসো তপনের গল্পটি ছাপিয়ে দিয়েছে। তপন নিজের লেখার মধ্যে নিজের অস্তিত্ব খুঁজে না পাওয়াই তার দুঃখের কারণ।
(খ) প্রবল দুঃখের আঘাতে তপন কঠোর সংকল্প গ্রহণ করে। প্রতিজ্ঞা করে , যদি কখনও সে লেখা ছাপতে দেয় , তবে নিজে গিয়ে দিয়ে আসবে। তার কাঁচা হাতের লেখায় সে পাঠাবে। কোনো অবস্থাতেই প্রতিষ্ঠিত কিংবা পরিচিত লেখকের মাধ্যমে লেখা পাঠাবে না। সেই লেখা ছাপা হোক বা না হোক , তাকে যেন আর শুনতে না-হয় যে অমুক তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে। নিজের গল্প পড়তে বসে তাকে যেন অন্যের লেখা লাইন পড়তে না হয় -এটাই তার দৃঢ় সংকল্প ছিল।
"তবে আর পায কে তপন কে"-ব্যখ্যা করো
ReplyDelete(উতর)