কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখেছেন -- দেখেছেন তার প্রতিক্রিয়া , দেখেছেন খরা , প্রাকৃতিক বিপর্যয় , মন্বন্তর , দাঙ্গা , দেশ-বিভাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভের অনিবার্য প্রতিক্রিয়াও। তাঁর অভিজ্ঞতার ইতিহাস তাঁর সমসাময়িক অন্যান্য মহৎ কবির মতই স্বপ্ন গড়ে তোলার ইতিহাস নয় --স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পৰ্য্যায়ক্রমিক ইতিহাস।
" জন্মভূমি আজ " কবিতাটি কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের " বেঁচে থাকার কবিতা " থেকে নেওয়া হয়েছে।
দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু কবি তাঁর জন্মভূমি ভারতবর্ষের দিকে তাকিয়ে অনুভব করেছেন
" এখনও রাত শেষ হয় নি" । দেশের মানুষেরা এখনও ভালো নেই। এখনও রাতের অন্ধকারের দুঃখ , কষ্টের যন্ত্রনা কঠিন পাথরের মতো মানুষের বুকে চেপে বসে আছে। মানুষ বুক ভরে শ্বাস নিতে পারছে না।
কবি বুঝতে পারছেন দেশবাসীর উপর দারিদ্রতা , দুঃখ-কষ্টের 'ভয়ংকর কালো আঁধার ঘনিয়ে আছে। কিন্তু কবি দেশবাসীকে সাহসী হতে বলছেন। সাহসী হয়ে যে করেই হোক পাথরটিকে সরিয়ে দিতে হবে এবং রাতের অন্ধকারের মতো সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে জানিয়ে দিতে হবে যে তারা ভয় পায় না। দেশকে আবার নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। রুক্ষ , শুষ্ক মাটিতে বৃষ্টি আসবে। ফসল ফলাতে হবে। নাহলে জন্মভূমি মরুভূমিতে পরিণত হবে। যখন প্রলয় আসে , অনেক মানুষই ভয়ে পিছিয়ে যায়। কিন্তু জন্মভূমি আমাদের প্রতীক্ষায় আছে। তাই আমাদের ভয় পেলে চলবে না। পরস্পরের হাত ধরে এগিয়ে যেতে হবে।
noice
ReplyDelete