Friday, 17 June 2022

দাম - নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়


প্রশ্ন ও উত্তর  ( প্রথম অংশ ) 

(১) " স্কুলে কী বিভীষিকাই যে ছিলেন ভদ্রলোক !" 

এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? তিনি কেন বিভীষিকা ছিলেন ? 

উত্তরঃ 

আলোচ্য অংশটিতে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের কথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।  

          অঙ্কে অসাধারণ দক্ষ সেই মাস্টারমশাই যে কোনো অঙ্কই মুহূর্তে সমাধান করে ফেলতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে অঙ্ক না জানলে জীবন বৃথা।  তাই মাস্টারমশাই অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে ছাত্রদের অঙ্ক শেখানোর চেষ্টা করতেন।  ছাত্ররা অঙ্ক না পারলে ক্রূদ্ধ মাস্টারমশাই এর প্রকান্ড হাতের প্রচন্ড চড় তাদের পিঠে নেমে আসত  কিন্তু কাঁদবার জো ছিল না, এ কারণেই তিনি ছাত্রদের কাছে বিভীষিকা ছিলেন।  

(২) " সব যেন ওঁর মুখস্থ " 

-- যাঁর কথা বলা হয়েছে তাঁর সব মুখস্থ ছিল বলে ছাত্রদের কেন মনে হত ? 

উত্তরঃ 

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' ছোটগল্পের গল্পকথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা এখানে বলা হয়েছে।  ছাত্রদের মনে হত , পৃথিবীর সব অনেক মাস্টারমশাইয়ের মুখস্থ ছিল।  কারণ , যেসব জটিল অঙ্ক তারা কিছুতেই মেলাতে পারত না , মাস্টারমশাই মাত্র একবার সেটি দেখেই বোর্ডে তার সমাধান করে দিতেন।  শুধু  তাই নয় , এমন অনায়াস ভঙ্গিতে তিনি অঙ্কের সমাধান করে দিতেন।  শুধু তাই নয় , এমন অনায়াস ভঙ্গিতে তিনি অঙ্কের সমাধান করতেন যে মনে হত , সেটি যেন অদৃশ্য হরফে বোর্ডে লেখা আছে আর তিনি শুধু তার উপর খড়ি বোলাচ্ছেন।  

(৩) " ওঁর ভয়ে তারাই তটস্থ হয়ে থাকত " - কার ভয়ে করা কেন তটস্থ হয়ে থাকত ? 

উত্তরঃ

 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' ছোটগল্পে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভয়ে যারা পরীক্ষায় একশোতে একশো পেত তারাও তটস্থ হয়ে থাকত। 

              স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন অসাধারণ দক্ষ।  যে কোন জটিল অঙ্কই তিনি অনায়াসে সমাধান করে ফেলতেন।   মাস্টারমশাই মনে করতেন , অঙ্ক না জানলে জীবন বৃথা।  তাই তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে ছাত্রদের অঙ্ক শেখাতেন।  কিন্তু ছাত্ররা অঙ্ক না পারলে তিনি ভয়ানক রেগে গিয়ে তাদের মারতেন বলেই লেখাপড়ায় ভালো ছাত্ররাও তাঁকে ভয় পেত।  

(৪) " কিন্তু কাঁদবার জো  ছিল না " 

- (ক) কাদের কাঁদবার জো ছিল না ? 

(খ) কেন তাদের কাঁদবার জো ছিল না ? 

উত্তরঃ 

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' ছোটগল্পের গল্পকথক সুকুমার ও তাঁর স্কুলের সহপাঠীদের কাঁদবার জো ছিল না।  

   সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই মনে করতেন প্রতিটি ছাত্রের উচিত অঙ্ক জানা এবং অঙ্ককে ভালোবাসা।  তিনি ছাত্রদের প্রাণপণে অঙ্ক শেখানোর চেষ্টা করতেন।  আর এই জন্য প্রয়োজনে তাদের প্রহার করতেও দ্বিধা করতেন না।  মাস্টারমশাইয়ের মতে , অঙ্ক না পেরে কাঁদার বিষয়টি একেবারেই পুরুষোচিত নয়।  মার্ খেয়ে ছাত্রদের কান্না পেলেও তারা কাঁদতে পারত না।  কারণ কাঁদলে মাস্টারমশাই আরো রেগে যেতেন। 

(৫)  " পুরুষ মানুষ হয়ে অঙ্ক পারিসনে " 

--- উক্তিটির আলোকে বক্তার মনোভাব ব্যাখ্যা কর। 

উত্তরঃ 

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' ছোটগল্প থেকে উল্লিখিত আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই। 

      মাস্টারমশাই নিজে ছিলেন অঙ্ক -অন্তঃপ্রাণ।  তিনি বিশ্বাস করতেন , অঙ্ক জানা এবং অঙ্ককে ভালোবাসা প্রতিটি ছাত্রের অবশ্য কর্তব্য।  মাস্টারমশাই ছেলেদের স্কুলে পড়াতেন , তাই তাঁর কাছে পৌরুষ এবং ছেলেদের অঙ্কে দক্ষতা প্রায় সমার্থক ছিল।  অঙ্ক না পেরে তাঁর হাতে মার্ খেয়ে ছেলেরা কাঁদলে তিনি এভাবেই তাদের ধিক্কার জানাতেন। 

(৬) " এখনি পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেবো " 

-----   বক্তা কেন পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার কথা বলেছেন ? 

উত্তরঃ 

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' ছোটগল্প থেকে নেওয়া উক্তিটি সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের।  

            অঙ্ক -অন্তঃপ্রাণ মাস্টারমশাইয়ের ক্লাসের কোনো ছাত্র অঙ্ক না পারলেই তার পিঠে নেমে আসত তাঁর প্রকান্ড হাতের  প্রচন্ড চড়।  সে চড় খেয়ে কোনো ছাত্র কাঁদলেই তাকে তিনি পা ধরে পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিতেন।  তাঁর মতে অঙ্ক না পৰ এবং কাঁদা , দুটোই পুরুষমানুষের পক্ষে চরম লজ্জার বিষয়। 

(৭) " এমন ঘটনা কল্পনাও করতে পারতেন না। " 

- যাঁর কথা বলা হয়েছে , তিনি কোন অঘটন কল্পনা করতে পারতেন না ? 

উত্তরঃ 

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' ছোটগল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের  কথা বলা হয়েছে।  

               গল্পকথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের অঙ্কে অসাধারণ দক্ষতা ছিল।  যে-কোনো ধরণের জটিল অঙ্কের দিকে একবার মাত্র তাকিয়েই তিনি অনায়াসে সেটি সমাধান করে ফেলতে পারতেন।  তিনি বিশ্বাস করতেন অঙ্ক জানা এবং অঙ্ককে ভালোবাসা প্রতিটি ছাত্রের অবশ্য কর্তব্য।  মাস্টামশাই ছেলেদের স্কুলে পড়াতেন , তাই তাঁর কাছে পৌরুষ এবং ছেলেদের অঙ্কে দক্ষতা প্রায় সমার্থক ছিল।  একজন পুরুষমানুষ অঙ্ক পারে না , এটাই ছিল মাস্টারমশাইয়ের কাছে অঘটন।  এমন অঘটন তিনি কল্পনাও করতে পারতেন না।  

(৮) " প্লেটোর দোরগোড়ায় কী লেখা ছিল , জানিস ? " 

(ক) প্লেটো কে ? 

(খ) বক্তা প্লেটোর দোরগোড়ায় কোন লেখার কথা বলেছেন ? 

উত্তরঃ 

(ক) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' ছোটগল্পে উল্লিখিত প্লেটো ছিলেন প্রাচীন  গ্রিসের বিখ্যাত দার্শনিক ও গণিতজ্ঞ।  তিনি সক্রেটিসের শিষ্য ছিলেন।  তাঁর লেখা বিখ্যাত গ্রন্থ 'দ্য রিপাবলিক'। 

(খ) অঙ্ক -অন্তঃপ্রাণ মাস্টারমশাই বলতেন যে , প্লেটোর বাড়ির দোরগোড়ায় লেখা ছিল যারা অঙ্ক জানে না তাঁর বাড়িতে তাদের প্রবেশ নিষেধ।  মাস্টারমশাইয়ের মতে স্বর্গের দরজাতেও নাকি ওই একই কথা লেখা আছে।  

(৯) " সে স্বর্গের চাইতে লক্ষ যোজন দূরে থাকাই আমরা নিরাপদ বোধ করতুম " 

-- বক্তার এই রকম মনে করার কারণ কী ? 

উত্তরঃ 

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' ছোটগল্পের  অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কাছে অঙ্ক না পারাটা ছিল অপরাধ।  তিনি ছাত্রদের বলতেন যে গ্রিক গণিতজ্ঞ প্লেটোর বাড়ির দোরগোড়ায় লেখা ছিল যারা অঙ্ক জানে না তাঁর বাড়িতে তাদের প্রবেশ নিষেধ।  মাস্টারমশাই বলতেন স্বর্গের দরজাতেও নাকি ওই একই কথা লেখা আছে।  তাই গল্পকথক সুকুমার ও তাঁর সহপাঠীদের মনে হত , যে স্বর্গে ঢুকেই জ্যামিতির এক্সট্রা বা স্কোয়ার মেজারের অঙ্ক করতে হয় তার থেকে দূরে থাকাই নিরাপদ। 











                       























 







No comments:

Post a Comment

পোস্টমাস্টার

প্রশ্ন ও উত্তর    (১) ' পোস্টমাস্টার' গল্পটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ?  উত্তরঃ  ' পোস্টমাস্টার' গল্পটি 'হিতবাদী' পত...