" তোতা কাহিনি "
প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন : (১) " পাখিটাকে শিক্ষা দাও ---"
(ক) পাখিটার শিক্ষার জন্য কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল ?
(খ) পাখিটার শেষ পরিণতি কী হয়েছিল ?
উত্তরঃ
(ক) তোতাকে শিক্ষিত করার প্রয়োজনে প্রথমেই রাজপন্ডিতদের পরামর্শে স্যাকরাকে দিয়ে একটি ভালো সোনার খাঁচা তৈরি করা হয়। সেই খাঁচায় নিয়মতন্ত্রের বেড়াজালে তোতাকে বন্দি করা হয়।
এরপর পন্ডিতেরা লিপিকরদের ডেকে রাশি রাশি পুঁথি নকল করে পর্বত প্রমাণ স্তূপ নির্মান করেন। খাঁচাটাকে কেন্দ্র করে তদারকি , মেরামতি , ঝাড়া-মোছা , পালিশ ইত্যাদি আয়োজনের সীমা রইল না। প্রচুর লোক তোতার শিক্ষার বিভিন্ন দায়িত্ব নিযুক্ত হল এবং তাদের ওপর নজর রাখার জন্য বহু লোক নিযুক্ত হল। শিক্ষার জন্য রাজকোষ থেকে প্রচুর অর্থ ব্যয় হতে লাগল।
(খ) মুক্ত তোতাটিকে সোনার খাঁচায় বন্দি করে রাশি রাশি পুঁথির পাতা জোরপূর্বক কলমের ডগা দিয়ে মুখের মধ্যে ঠেসে দিয়ে শিক্ষার নাম নির্মম পীড়নের জন্য পাখিটি মারা গিয়েছিল।
(২) " নিন্দুকের যেন আচ্ছা ক্রিয়া কান মলিয়া দেওয়া হয়। ......."
(ক) কার লেখা ? কোন গল্পের অংশ ?
(খ) কাকে বলেছেন ? কখন বলেছেন ?
(গ) নিন্দুকের কেন কান মুলে দিতে হবে ?
উত্তরঃ
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ' তোতাকাহিনি ' গল্পের অংশ।
(খ) রাজামশাই যখন তোতা পাখিটি ও তার শিক্ষার আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন দেখে ফায়ার যাচ্ছিলেন তখন কানমলা সর্দারকে বলেন যে নিন্দুকের যেন কান মুলে দেওয়া হয়।
(গ) সোনার খাঁচার ভিতরে বাইরে আড়ম্বরের বাহুল্যে তোতাপাখিটিকে প্রায় দেখাই যায় না। তবু নিন্দুকদের নিন্দাবাদ ও মন্দ রটনা বন্ধ করার জন্যই রাজা পাখিটিকে দেখলেন। তিনি দেখলেন যে , খাঁচাটার মধ্যে তুচ্ছ দানা -পানি রাখা হয়নি , তবে রাশি রাশি পুঁথির পাতা ছিঁড়ে কলমের ডগা দিয়ে পাখির মুখের ঠাসা হচ্ছে। পাখির গান তো সে কারণে বন্ধই তার চিৎকার করারও কোনো আর উপায় রাখা হয়নি। তোতার শিক্ষার এই পরিণতি দেখে রাজা বুঝতে পারলেন যে নিন্দুকেরা মিথ্যে কথা বলছে। তাই তিনি কানমলা সর্দারকে নির্দেশ দিলেন নিন্দুকের কান মিলে দিয়ে যেন তাকে শাস্তি দেওয়া হয়।
(৩) " তাদের সংসারে আর টানাটানি রহিল না। "
(ক) কার লেখা , কোন গল্পের অংশ ?
(খ) এখানে কাদের সংসারের কথা বলা হয়েছে ?
(গ) কেন টানাটানি রইল না ?
উত্তরঃ
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা " তোতাকাহিনি " গল্পের অংশ।
(খ) পুঁথির লিপিকরদের সংসারের কথা বলা হয়েছে।
(গ) মূর্খ বন্য পাখিটিকে শিক্ষিত করে তুলতে এসে পন্ডিতেরা জানান যে এই শিক্ষাদান " অল্প পুঁথির কর্ম নয়। " তাই বহু সংখ্যক পুঁথির প্রয়োজন পড়ে। পুঁথি লেখকরা রাশি রাশি পুঁথির নকল করে এবং নকলের নকল করে স্তূপীকৃত করে তোলে। শিক্ষার এই আড়ম্বরপূর্ন আয়োজন দেখে মুগ্দ্ধ রাজা বলদ বোঝাই করে বিপুল পরিমাণ পারিতোষিক দেন লিপিকরদের। তাই লিপিকরদের সংসারে আর টানাটানি রইল না।
(৪) " উন্নতি হইতেছে। "
(ক) কিসের উন্নতির কথা বলা হয়েছে ?
(খ) করা এই উন্নতির হবার কথা বলেছে ?
(গ) পাখিটির কী উন্নতি হয়েছিল ?
উত্তরঃ
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা " তোতাকাহিনি " পাঠ্যাংশে মুক্ত তোতাকে রাজার আদেশে , রাজপন্ডিতদের পরামর্শে ও রাজার ভাগিনেয়দের তৎপরতায় খাঁচায় বন্দি করে শিক্ষিত করে তোলার জন্য যে বিপুল আয়োজন করা হয়েছে , সেই আয়োজনকে লক্ষ করেই তোতার শিক্ষার বা শিক্ষা - ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলা হয়েছে।
(খ) যে সমস্ত মানুষ বাইরের আড়ম্বর দেখে মুগ্দ্ধ হয় , তারাই তোতার শিক্ষার আয়োজন দেখে মুগ্দ্ধ বিস্ময়ে এই কথা বলেছে।
(গ) ছোট্ট তোতাটি বনে বনে উড়ে বেড়াতো , মুক্তির আনন্দে লাফাতো , গান করতো , বনের ফল খেয়ে ক্ষুধানিবৃত্তি করতো। কিন্তু রাজার আদেশে তাকে শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাজার ভাগিনীদের ওপর পাখিকে শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব অর্পিত হয়। রাজপন্ডিতেরা বহু বিচার করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে পাখিটির সাধারণ ক্ষুদ্র বাসাটি জ্ঞানসমৃদ্ধ শিক্ষার পক্ষে উপযুক্ত নয়। তাই পাখির শিক্ষার আয়োজন করতে হলে প্রথমেই একটা ভালো খাঁচা বানানো দরকার। পন্ডিতদের পরামর্শক্রমে স্যাকরা এসে পাখির শিক্ষার জন্য সোনার খাঁচা বানাতে বসল।
এরপর পন্ডিতেরা পাখিকে শিক্ষাদানের জন্য উপযুক্ত পুঁথি রচনায় মনোযোগী হলেন। যথার্থ শিক্ষাদান যেহেতু ' অল্প পুঁথির কর্ম নয় ' , সেহেতু তাঁরা লিপিকরদের নিয়ে রাশি রাশি পুঁথির নকল করতে শুরু করলেন। সকলে এই আয়োজন দেখে বাহবা দিল।
রাজার ভাগিনেয়রা অত্যন্ত ব্যস্ততা ও তৎপরতার সঙ্গে খাঁচার দেখাশুনা , ঝাড়ামোছা , পালিশ করা , মেরামতির ঘটা লেগেই রইল। প্রচুর লোকের ওপর এই বৃহৎ কর্মকান্ডের দায়িত্ব অর্পিত হল। আবার তাদের ওপর নজরদারির জন্যও আরো লোক নিযুক্ত হল। প্রতিমাসে এত কর্মীর বেতন বাবদও অপরিমিত ব্যয় হতে লাগল।
পাখির শিক্ষার জন্য এত বিপুল আয়োজন , এত কর্মী , নজরদারি ,ও অপরিমিত অর্থব্যয়ের ঘটা দেখেই সাধারণ মানুষের মনে হয়েছে যে পাখির শিক্ষার যথেষ্ঠ উন্নতি হচ্ছে।
(৫) পাখির খাঁচা তৈরির উপদেশ কারা দিয়েছিল ?
উত্তরঃ পন্ডিতেরা পাখির খাঁচা তৈরির উপদেশ দিয়েছিল।
(৬) তনখা কাকে বলে ?
উত্তরঃ তনখা হল কোন কাজের পরিবর্তে পাওয়া পারিশ্রমিক।
(৭) কারা খেতে পায় না বলে মন্দ কথা বলে ?
উত্তরঃ নিন্দুকেরা খেতে পায় না বলে মন্দ কথা বলে।
(৮) পারিতোষিক পেয়ে বলদ বোঝাই কারা করেছিল ?
উত্তরঃ লিপিকরের দল পারিতোষিক পেয়ে বলদ বোঝাই করেছিল।
(৯) মৃদঙ্গ কী ?
উত্তরঃ মৃদঙ্গ একটি বাদ্যযন্ত্র বিশেষ।
(১০) " লোকসান ঘটায় " ........কে কীভাবে লোকসান ঘটায় ?
উত্তরঃ 'তোতা কাহিনি' গল্পের তোতা পাখিটি বনের ফল খেয়ে রাজহাটে ফলের বাজারে লোকসান ঘটায়।
This will be very useful.Thank you
ReplyDeleteAyy it's Swapnil well done bro.. The website is amazing😍
ReplyDeletethank you Swapnil
ReplyDelete