Friday, 6 November 2020

রথযাত্রা

 


রথযাত্রা :  

মনে রাখার বিষয় :  

    • রথযাত্রা " গল্পটি নেওয়া হয়েছে " লিপিকা " গ্রন্থ থেকে 
    • " রথযাত্রা " প্রসঙ্গে গীতাঞ্জলির কবিতা বিশেষ ভাবে স্মরণীয় :    
    •     (১) এসো হে পতিত করো অপনীত /সব অপমানভার 
    •     (২) যেথায় থাকে সবার অধম দীনের হতে দীন / সেইখানে যে চরণ তোমার রাজে / সবার পিছে , সবার নীচে,/ সব-হারাদের মাঝে 
    •   (৩)  'হে মোর দুর্ভাগা দেশ , যাদের করেছ অপমান / অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।

গল্প শুরু হয় রথযাত্রার দিন।  রাজা ও রানি রথ দেখতে যাবেন।  তাই তার প্রস্তুতি শুরু হল।চারিদিকে 'সাজো' ' সাজো 'রব উঠল।    ঘোড়াশালা থেকে ঘোড়া , হাতিশালা থেকে হাতি এল।  ময়ূরপঙ্খী সাজান হল।  বল্লম হাতে সারি সারি সিপাই সান্ত্রী , দাস-দাসী সবাই রাজা -রানির সঙ্গে চলল।  কেবল একজন গেল না---দুঃখী গেল না রাজার সাথে।  দুঃখীর কাজ হল রাজবাড়িতে ঝাঁটার কাঠি কুড়িয়ে আনা। সর্দারের দয়া হল।  সে দুঃখীকে তাদের সঙ্গে যেতে বলল।  কিন্তু দুঃখী বলল তার যাওয়া হবে না।  রাজামশাই জানতে পারলেন।  সবাই যাচ্ছে , শুধু সেই দুঃখী যাচ্ছে না।  রাজামশায়েরও দয়া হল।  তিনি মন্ত্রীকে বললেন দুঃখীকে ডেকে নিতে। দুঃখীর বাড়ি রাস্তার ধারে। রাজার হাতি যখন সেখানে পৌঁছল তখন মন্ত্রী তাকে ডেকে তাদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যেতে বললেন।  দুঃখী বলল ঠাকুরের দুয়ার পর্যন্ত পৌঁছায় তার সাধ্য নেই।  মন্ত্রী তাকে অভয় দিয়ে বলল সে রাজার সঙ্গে যাবে কাজেই তার কোন চিন্তা নেই।  দুঃখী উত্তরে জানাল রাজার পথ আর তার পথ এক হতে পারে না।  মন্ত্রী বললেন তাহলে দুঃখীর ভাগ্যে কী করে "রথযাত্রা " দর্শন হবে।  দুঃখী মন্ত্রীকে জানাল ঠাকুর রথে করে তার দুয়ারেই আসেন।  দুঃখীর এই কথায় মন্ত্রী হেসে উঠে জিজ্ঞাসা করলেন তার দুয়ারে ঠাকুরের রথের চিহ্ন কোথায়।  দুঃখী তাঁকে জানায় তার দুয়ারে ঠাকুর আসেন পুষ্পক রথে করে তাই  ঠাকুরের রথের চিহ্ন পড়ে না।  সে তার দুয়ারের দুই পাশে দুটি সূর্যমুখী ফুল দেখিয়ে বলে ঐটাই ঠাকুরের রথ।  
         "রথযাত্রা " রবীন্দ্রনাথের একটি প্রতীকি  গল্প। ছোট এই গল্পটির মাধ্যমে কবি একটি বড়ো সত্যকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।  
            পুষ্পক রথ পুষ্পেরই রথ।  সূর্যমুখী ফুল অর্থাৎ সূর্যের রথ।  দুই পাশে দুটি সূর্যমুখী সেই পুষ্পরথের হলুদে আর কালোয় বলয়িত দুটি চাকা। সূর্যের আলোয় ফুটে ওঠা পৃথিবীর ফুল যেমন অত্যন্ত স্বাভাবিক , নির্মল তেমন দুঃখীর মত যারা মাটির কাছের মানুষ তারাও ঈশ্বরের করুণা থেকে কখনও বঞ্চিত হয় না।  ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্য তাদের রাজা , মন্ত্রী বা সর্দারের দয়ার কোন প্রয়োজন নেই।  ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজমান।  তাই তাঁকে দেখার জন্য কোন অয়োজনের প্রয়োজন পরে না।  মনের চোখ থেকে দেখলে আমাদের আশেপাশেই তাঁকে দেখা যায়।   



No comments:

Post a Comment

পোস্টমাস্টার

প্রশ্ন ও উত্তর    (১) ' পোস্টমাস্টার' গল্পটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ?  উত্তরঃ  ' পোস্টমাস্টার' গল্পটি 'হিতবাদী' পত...