কোন দেশেতে তরুলতা
সকল দেশের চাইতে শ্যামল
কোন দেশেতে চলতে গেলেই
দলতে হয় রে দূর্বা কোমল ?
কোথায় ফলে সোনার ফসল ,
সোনার কমল ফোটে রে ?
সে আমাদের বাংলা দেশ
আমাদেরি বাংলা রে।
কোথায় ডাকে দোয়েল শ্যামা
ফিঙে গাছে গাছে নাচে ?
কোথায় জলে মরাল চলে
মরালী তার পাছে পাছে ;
বাবুই কথা বাসা বোনে
চাতক বারি যাচে রে ?
সে আমাদের বাংলা দেশ
আমাদেরি বাংলা রে।
কোন দেশের দুদর্শায় মোরা
সবার অধিক পাই রে দুখ ?
কোন দেশের গৌরবের কথায়
বেড়ে ওঠে মোদের বুক ?
মোদের পিতৃ-পিতামহের
চরণধূলি কোথায় রে ?
সে আমাদের বাংলা দেশ
আমাদেরি বাংলা রে।
শব্দার্থ :
তরুলতা- গাছপালা
দলতে - মাড়িয়ে যেতে
কোমল - নরম
মরাল- রাজহাঁস
মরালী - রাজহংসী
চরণধূলি - পায়ের ধুলো
সোনার ফসল- ধান , পাকা ধানের রঙ হলুদ। তাই ধান পাকলে মনে হয় মাঠে সোনা ফলে আছে।
চাতক - এক রকমের ছোটো পাখি। কথিত আছে যে , এরা মেঘের কাছে জল প্রাথর্না করে এবং বৃষ্টির জল ছাড়া অন্য জল পান করে না।
শ্যামল- সবুজ
দূর্বা - ছোটো ঘাস
কমল- পদ্ম
বারি -জল
দুর্দশা - দুরবস্থা
অধিক - বেশি
পিতামহ - ঠাকুরদা
যাচে - চায়
গৌরব - সম্মান
পিতৃ- পিতা ,বাবা
প্রশ্ন ও উত্তর :
(১) "বাংলাদেশ " কবিতাটি কে লিখেছেন ?
উত্তর : সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
(২) বাংলাদেশে চলতে গেলে কী দলতে হয় ?
উত্তরঃ দূর্বা ঘাস
(৩) কোথায় ফলে সোনার ফসল এবং কোথায় সোনার কমল ফোটে ?
উত্তরঃ বাংলাদেশে সোনার ফসল ফলে এবং সোনার কমল ফোটে।
(৪) এ দেশে কোন কোন পাখি গান গায় ? কোন পাখি বাসা বোনে ?
উত্তরঃ দোয়েল আর শ্যামা পাখি গান গায়। বাবুই পাখি বাসা বোনে।
(৫) এ দেশের জলে কী চড়ে বেড়ায় ?
উত্তরঃ এ দেশের জলে মরাল মরালী চড়ে বেড়ায়।
(৬) এ দেশের দুর্দশার কথা শুনলে আমাদের কেমন লাগে ?
উত্তরঃ এ দেশের দুর্দশার কথা শুনলে আমাদের সবথেকে বেশি দুঃখ হয়।
(৭) এ দেশের গৌরবের কথা শুনলে আমাদের কেমন লাগে ?
উত্তরঃ এ দেশের গৌরবের কথা শুনলে আমাদের গর্বে বুক ফুলে ওঠে।
(৮) এ দেশের মাটিতে কাদের চরণধূলি মিশে আছে ? " চরণধূলি " কথার অর্থ কী ?
উত্তরঃ এ দেশের মাটিতে আমাদের পূর্বপুরুষের চরণধূলি মিশে আছে।
" চরণধূলি " কথাটির অর্থ হল পায়ের ধুলো।
(৯) 'পিতৃ -পিতামহ' বলতে কী বোঝায় ? তাঁরা কীভাবে আমাদের প্রভাবিত করেন ?
উত্তরঃ আমাদের পূর্বপুরুষ অর্থাৎ বাবা ও ঠাকুরদা হলেন যথাক্রমে পিত বা পিতৃ এবং পিতামহ।
আমাদের জন্মভূমিতে আমাদের আগে তাঁদের জীবন অতিবাহিত করেছেন। এই জন্মভূমির মাটিতেই তাঁরা পদচারণা করেছেন। তাই এর ধুলো পবিত্র ও পুণ্যময় রূপে আমাদের প্রভাবিত করে।
(১০) 'তরুলতা ' কী ? বাংলাদেশের তরুলতা কেমন ?
উত্তরঃ বৃক্ষ -গুল্ম-লতা ইত্যাদিকে কবি একত্রে তরুলতা বলেছেন।
সকল দেশের গাছপালার থেকেও বাংলাদেশের গাছপালা বা তরুলতা সবুজ।
(১১) বাংলাদেশের ধানকে কবি সোনার ফসল বলেছেন কেন ?
উত্তরঃ পাকা ধানের রঙ হলুদ। তাই সারা মাঠের ধান যখন পেকে ওঠে , তখন মনে হয় যেন সোনা ফলেছে। তাই কবি বাংলাদেশের ধানকে সোনার ফসল বলেছেন।
(১২) বাংলাদেশে যেসব পাখি দেখা যায় তাদের নাম বলো।
উত্তরঃ বাংলাদেশে চড়ুই , শালিখ, কাক, টিয়া , ময়না, কোকিল , হাঁস , কাকাতুয়া , দোয়েল, শ্যামা, ফিঙে প্রভৃতি পাখি দেখা যায়।
(১৩) 'বাংলাদেশ ' কবিতায় কোন কোন পাখির কী কী কাজের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ' বাংলাদেশ ' কবিতায় দোয়েল , শ্যামা , ফিঙে , রাজহাঁস , রাজহংসী , বাবুই ও চাতক পাখির কথা বলা হয়েছে।
এখানে দোয়েল ও শ্যামা পাখি সুন্দর শুরে ডাকে , ফিঙে পাখি গাছে গাছে নেচে বেড়ায় , রাজহংসী রাজহাঁসের পেছন পেছন জলে সাঁতার কাটে , বাবুই পাখি গাছের ডালে বাসা বোনে আর চাতক পাখি বৃষ্টির জল প্রার্থনা করে।